দেশজুড়ে

সুদানে সন্ত্রাসী হামলা

নিহত সবুজের পরিবারে শোকের মাতম

ছবি: সংগৃহীত

সুদানের অবস্থিত জাতিসংঘের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী সদস্য নিহত হন। তাদেরই একজন ছিলেন সবুজ মিয়া (২৮)।

নিহত সবুজ মিয়া গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের ছোট ভগবানপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের মৃত হাবিদুল ইসলাম ও ছকিনা বেগমের ছেলে। তার মৃত্যুর খবরে গ্রামের বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবার, স্বজন ও গ্রামবাসীর কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। স্ত্রী নুপুর আক্তার (২২) আহাজারি করছেন। বারবার লুটিয়ে পড়ছেন। তার বৃদ্ধা মা ছকিনা বেগম (৬৮) কখনো কাঁদছেন, কখনো সংঞ্জাহীন হয়ে পড়ছেন।

মহদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আকন্দ জানান, চরম দারিদ্রতায় বড় হওয়া সবুজ মিয়া মাত্র ১৩ বছর বয়সে ২০০০ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লন্ড্রি কর্মচারী হিসেবে যোগ দেন। সেনাবাহনীতে যোগদানের পর তিনিই সংসারের হাল ধরেন।

তার বৃদ্ধ মা ছকিনা বেগম (৬৮) ভাঙ্গা ভাঙ্গা কণ্ঠে নিজের ভাষায় বলছিলেন, ‘হামার একন্যা ব্যাটা। তাই কিসোক বিদেশোত গ্যালো। বিদেশোত না গ্যালে হামার ব্যাটা মরলো না হয়, তোমরা হামার ব্যাটাক আনি দেও বাবা’।

গেল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সবুজের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হওয়ার কথা ছিলো সবুজের স্ত্রী নুপুর আক্তারের। কিন্তু রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর শোনেন স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ।

নুপুর আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের নতুন সংসার। অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল, এখন স্বামীকেই হারালাম। স্বামীকে হারিয়ে তার এখন চাওয়া বেঁচে থাকার জন্য সরকার যেন তার একটা চাকুরির ব্যবস্থা করে দেয়।’

নিহত সবুজের পরিবারে বৃদ্ধা মা ও তার স্ত্রীর ভবিষ্যৎ গড়ার ব্যবস্থা করবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসির।

উল্লেখ্য, গেল শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে স্থানীয় সময় আনুমানিক দুপুর ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলা পরিচালনা করা হয়। ওই হামলায় দায়িত্বরত ৬ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শহীদ হন এবং ৮ জন শান্তিরক্ষী আহত হন।

 

 
এসএইচ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন