সিলিন্ডার বেঁধে মাকে হাসপাতালে নেয়া ছেলেটি করোনায় আক্রান্ত
করোনা আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে পিঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে মায়ের মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে মোটরসাইকেলে প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বরিশালের শেবাচিম হাসপাতালে এসেছিলেন ঝালকাঠির জিয়াউল হাসান টিটু। মাকে সুস্থ করে বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে ফিরেছেন বাড়ি। তবে ওই তরুণ ব্যাংকারই এবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এ তথ্য জানান খোদ জিয়াউল হাসান টিটু। তিনি জানান, শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে নলছিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি, তার মা ও ভাই অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট করান। মা ও ভাইয়ের রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও তার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তবে তিনি সুস্থ আছেন। এ ছাড়া তার মাঝে করোনার কোনো উপসর্গও নেই।
তার মা সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন জানিয়ে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন জিয়াউল হাসান টিটু।
এদিকে জিয়াউলের মায়ের প্রতি ভালোবাসা দেখে আজ তার জন্য একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুম্পা সিকদার। তবে করোনা পজিটিভের জন্য সেই আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। তিনি সুস্থ হলেই সংবর্ধনার আয়োজনটি করা হবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও।
ইউএনও রুম্পা সিকদার বলেন, 'জিয়াউলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছি। সুস্থ হলে আমরা তাকে সম্মানিত করতে চাই। তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।'
গত ১৭ এপ্রিল নলছিটি উপজেলার সূর্যপাশা গ্রামে হোম আইসোলেশনে থাকা করোনা আক্রান্ত স্কুল শিক্ষিকা রেহানা পারভীনের (৫০) অক্সিজেন সেচুরেশন ৭০ এর নিচে নেমে আসে। এতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। মা'কে বাঁচাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার শরীরে বেঁধে মা'কে মোটর সাইকেলে করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় তার ছেলে জিয়াউল হাসান টিটু। সেদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়ে পড়ে হাসপাতালে যাওয়ার দৃশ্যটি।
গত ২৩ এপ্রিল মায়ের অক্সিজেন সেচুরেশন ৯৬ নিয়ে বাড়ি ফেরেন রেহানার দুই সন্তান মেহেদী হাসান মিঠু এবং জিয়াউল হাসান টিটু।
জিয়াউল জেলার নলছিটি পৌরসভার বাসিন্দা। তিনি ঝালকাঠি জেলা সদরের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শাখার সিনিয়র অফিসার পদে কর্মরত রয়েছেন। তার ছোট ভাই রাকিব হাসান চট্টগাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। আর বড় ভাই মেহেদী হাসান খুলনার দৌলতপুর থানায় এসআই পদে কর্মরত রয়েছেন। জিয়াউলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম মোল্লা।
এএ