আর্কাইভ থেকে বিএনপি

ভ্যাকসিন নিয়ে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না: ফখরুল

শুধু দুর্নীতির কারণেই ভ্যাকসিন সংগ্রহে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

রোববার (২ মে) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভ্যাকসিন সংগ্রহের বিষয়ে আমি শুধু এতটুকু বলতে চাই, সরকার কতটা দায়িত্বহীন হলে, কতটা অযোগ্য হলে, জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কতটা বিচ্ছিন্ন হলে তারা একটা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। সেটার কারণটা হচ্ছে- শুধু দুর্নীতির কারণ, অন্য কোনো কারণ এর মধ্যে জড়িত নয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার মূলত কতগুলো মাফিয়া চক্রের মধ্যে একত্রিত হয়েছে এবং তাদের নিয়ে তারা দেশ চালাচ্ছে- একটা মাফিয়া সরকার তৈরি হয়েছে। এটা আমরা অনেকবারই কথা বলেছি- প্রতিটি ক্ষেত্রে মাফিয়ারাই আজকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই দেশের জন্যে। বাংলাদেশের পরিণতি যে এটা হবে- এটা আমরা কখনো আগে কল্পনাও করতে পারি নাই। আজকে দুর্ভাগ্য, ৫০ বছর পরও আমাদের এ রকম ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতি দেখতে হচ্ছে।

গত ১ মে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

ফখরুল বলেন, ভ্যাকসিনের অভাবে টিকা প্রদানের কার্যক্রম হঠাৎ করেই বন্ধ করায় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সভা মনে করে যে, দেশের সব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিএনপি এ বিষয়ে প্রথম থেকেই সরকারকে সতর্ক করেছে। কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত তো করেননি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারতের চাহিদা পূরণের জন্য বাংলাদেশে টিকা সরবরাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। এতে আমাদের আপত্তি নেই- ভারত তো তার চাহিদা পূরণ করবেই। কিন্তু আমাদের সরকার অপরাধমূলক কাজ করেছে। কারণ তারা বিকল্প উৎসের কোনো অনুসন্ধান করেনি। তাই আমাদের আশঙ্কা সত্যে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের সুযোগ থাকার পরও তা গ্রহণ করা হয়নি। আপনারা জানেন, চীনের একজন মন্ত্রী এসেছিলেন দেশে এবং এখানে চীনের যে ভ্যাকসিন উৎপাদন ও পরীক্ষার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সরকার সেটাকে সম্পূর্ণভাবে অবজ্ঞা করেছে। সরকারের এই দায়িত্বহীনতা ও দুর্নীতির জন্য অবশ্যই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় দেশে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ, কর্মে নিশ্চয়তা এবং লকডাউনে কর্মচ্যুত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণে তিন মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা হারে এককালীন অনুদান দেয়ার দাবি জানানো হয়।

এ ছাড়া শ্রমিক নির্যাতন ও বৈষ্যম বন্ধ এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পুলিশের গুলিতে নিহতের পরিবার ও আহতদের ক্ষতি পূরণ ও গ্রেফতার হওয়া শ্রমিকদের মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ফরিদপুরের সালথায় পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষের ঘটনায় নিরীহ গ্রামবাসী হোসেন মাতুব্বর ডিবি হেফাজতে মৃত্যুবরণের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের আইনের আওতা আনা ও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানানো হয়।

সম্প্রতি ভারতের একতরফাভাবে অক্সিজেন রফতানি বন্ধ ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করে স্থায়ী কমিটির সভায় বিকল্প উৎস থেকে আমদানির ব্যবস্থা এবং দেশে অক্সিজেন উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন