আর্কাইভ থেকে এশিয়া

জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে সংঘর্ষে আহত ১৮৪

ফিলিস্তিনের পূর্ব জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদে জুমাতুল বিদার দিনে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনির ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার রাতে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষে আহত হয়েছে ছয় ইহুদিবাদী পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ১৭৮ জন ফিলিস্তিনি। পুলিশের রাবার বুলেটে গুরুতর আহত অন্তত ৮৮ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জরুরি সেবা বিভাগ ও ইসরায়েলি পুলিশের উদ্বৃতি দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা রয়টার্স, সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও বিবিসি। রয়টার্স জানায়, জেরুসালেমের পুরনো শহরাঞ্চল আল জাররাহ থেকে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে ইহুদিবাদি দখলদারদের উচ্ছেদ করার খবরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর চড়াও হয় ইসরায়েলি পুলিশ। মুসল্লিদের বেশিরভাগ মসজিদের ভেতরেই আহত হয়। সংঘর্ষের সময় রাবার বুলেট ও স্ট্যান গ্রেনেড ছোড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। অপরদিকে, পাথর ও বোতল ছোড়ে পাল্টা প্রতিবাদ জানায় ফিলিস্তিনিরা।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার জুমাতুল বিদার পর থেকেই ইসরায়েলি দখলদারিত্বের প্রতিবাদে শেখ জাররাহসহ পূর্ব জেরুজালেমের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করে ফিলিস্তিনিরা। ইফতারের পর রমজানের বেজোড় রাত্রিতে লাইলাতুল কদরের সন্ধানে নামাজ আদায়ের জন্য আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকে তারা। এ সময় তাদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এমনকি নামাজরতদের লক্ষ্য করেও গুলি চালানো হয়। অনেক মুসলমানকে মসজিদ থেকে পিটিয়ে বের করে দেওয়া হয়। ছোঁড়া হয় টিয়ার শেল। আটক করা হয় কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে।

এদিকে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, আগামী কয়েকদিনে জেরুসালেমে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনের মুসলিমদের সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা আরও বাড়তে পারে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, আল-আকসা মসজিদে সন্ধ্যার পর নামাজ আদায়ে যাওয়া হাজার হাজার মানুষ দাঙ্গা সৃষ্টি করলে সেখানে শৃঙ্খলা ফেরাতে পুলিশবাহিনী মোতায়েন করেছে ইসরায়েল।

রয়টার্স জানায়, হ্যান্ড মাইক দিয়ে মুসলমানদের ওপর স্ট্যান গ্রেনেড নিক্ষেপ বন্ধে ও মুসলিম তরুণদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান আল-আকসা মসজিদের পরিচালক শেখ ওমর আল-কিসওয়ানি।

এক বিবৃতিতে মুসলমান ও বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণে ইসরায়েলকে বাহিনী ব্যবহারে সতর্ক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও।

এদিকে, এ ঘটনায় মুসলিমদের সশস্ত্র প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ী। এক টেলিভিশন বক্তৃতায় মুসলিম দেশগুলোকেও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

ইসরায়েলি পুলিশের দমনপীড়নের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে তুর্কি সরকার।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এ ঘটনা ঘটলো। এমন পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষকেই শান্ত ও সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন