আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানিবন্দি ২১ হাজার মানুষ, প্লাবিত ১৭ গ্রাম

পটুয়াখালীর উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ থেকে ৭ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার উপকূলীয় কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী উপজেলার ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার পানিবন্দি মানুষজন এখন দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন বলে জানিয়েছেন রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার (২৫ মে) বেলা ১১টার দিকে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

কলাপাড়ার লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন জানান, লালুয়া ইউনিয়নের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া একটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেখানে সরেজমিনে দেখতে যাচ্ছি। দেখার পর বলা যাবে কতটুকু ভেঙেছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, ৭০ এর পর ইতোপূর্বে কখনও এমন ভয়বাবহ পানি হয়নি। পানির তোড়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ইউনিয়নের চরলতা বেড়িবাঁধের ৭টি পয়েন্টের প্রায় ৪০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এসব বেড়িবাঁধ দিয়ে এবং পূর্বের ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত দিয়ে প্রবালবেগে জোয়ারের পানি ঢুকে চালিতাবুনিয়ার সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ইউনিয়নের ৯ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব পানিবন্দি মানুষজন তাদের পরিবার-পরিজন দিয়ে এখন দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান জানান, এই উপকূলে বাতাস নেই, বৃষ্টি নেই। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পানি বেড়েছে অস্বাভাবিক। অন্তত ৬ থেকে ৭ ফুট পানি বেড়েছে। পানির তোড়ে উপজেলার চালিতাবুনিয়ার চরলতায় বেড়িবাঁধের ৭টি পয়েন্টে ভেঙে গেছে এবং জোয়ারের পানি ঢুকে পুরো চালিতাবুনিয়া তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র, ৯৩টি মেডিকেল টিম, খাবার স্যালাইন ৫০ হাজার, ডায়রিয়ার স্যালাইন ৩৫ হাজার, এক লাখ টাকার শিশু খাদ্য, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ, সিপিপি, রেডক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস, ভলান্টিয়ার সদস্যগণ। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাৎক্ষণিক তথ্য প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের দুটি কন্ট্রোলরুম চালু করা হয়েছে। এছাড়া সব কয়টি উপজেলায়ও কন্ট্রোল রুম চালু করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী।

শেখ সোহান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন