আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

ফুলবাড়ীতে পুষ্টির কার্ড দেয়াকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনায় আহত ৬

যন্ত প্রকল্পের (পুষ্টি ভাতা) তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্তিকে কেন্দ্র করে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় যুবকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে চেয়ারম্যানসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন।

শনিবার বিকেলে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে ফুলবাড়ী থানা পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে গুরুতর আহত কাশিপুর গ্রামের মজাহার আলীর ছেলে শহিদুল ইসলামকে উদ্ধার করে পুলিশ ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করেছে ।

অন্যান্যের মধ্যে আহতরা হলেন- চেয়ারম্যান গোলজার হোনে মন্ডল (৫৪) সিরাজুল (৪১) জনি (২৪) ডাঃ আব্দুস সামাদ (৫৮) আবুবকর সিদ্দিক(৩৬)। 

আহত শহিদুল  বলেন, নিজের স্ত্রীর নাম পুষ্টি ভাতার তালিকায় অন্তর্ভৃুক্ত করার জন্য চেয়ারম্যান গোলজার হোসেনের কাছে যান তিনি। তালিকা  ফাইনাল করে উপজেলায় পাঠানো হয়েছে, আর দেয়া যাবে না।এরপর শহিদুলের সামনে অপর একজনের আইডি কার্ড নিলে তিনি চেয়ারম্যানকে টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাব শুনে চেয়ারম্যান তার ছোট ভাই আইনুল হকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। টাকার প্রস্তাবে রাজি হওয়ায় শহিদুল চেয়ারম্যানকে গালিগালাজ করেন। এতে রাগান্বিত হয়ে চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন তাকে চর-থাপ্পর দিলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় শহিদুলের ঘুষিতে চেয়ারম্যানের ডান ভ্রুর উপরে ফেটে রক্ত বের হয়। পরে চেয়ারম্যানের ভাই আইনুল, গ্রাম পুলিশ সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজন মিলে শহিদুলকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটকে রাখে। চেয়ারম্যান আহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে শতশত জনতা ইউনিয়ন পরিষদে ভীড় করে । তারা শহিদুলের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান। এই সুযোগে চেয়ারম্যানের ভাই, ছেলে, ভাতিজা ওই কক্ষের তালা খুলে দরজা লাগিয়ে শহিদুলকে বেধে আধা ঘন্টা ব্যাপি মারপিট করে। এতে শহিদুল জ্ঞান হারিয়ে ফেললে স্থানীয় লোকজন এবং চেয়ারম্যানের পরিবারের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে শহিদুলকে মারপিট করার প্রতিবাদে ওই চেয়ারম্যানকে প্রায় ঘন্টা ব্যাপি অবরুদ্ধ করে রাখে উৎসুক জনতা। খবর পেয়ে ফুলবাড়ী থানার পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে তার নিজ বাড়ীতে পৌছে দেন এবং শহিদুলকে মুমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করে।

প্রত্যক্ষদর্শী ইউনিয়ন পরিষদের ঝাড়ুদার আহম্মদ আলী ও মুদি দোকানদার রফিক ইসলাম জানান, চেয়ারম্যানের সাথে গোপন আর্থিক লেনদেনের কারণে মারামারির ঘটনাটি ঘটেছে। এই লেনদেনের সাথে চেয়ারম্যান ও তার ভাই আইনুল হক জড়িত।

স্থানীয় মাইদুল হক জানান, এর আগে ভিজিডি কার্ড দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে ৫০ জনের কাছ থেকে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা তুলে দেয় শহিদুল। এর মধ্যে ১৫/২০ জন কার্ড পান । সেদিন নিজের স্ত্রীর জন্য পুষ্টি কার্ডের বিপরীতে আবারও টাকা দাবী করলে পুর্বের টাকা ফেরত চান শহিদুল। এ নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

এ প্রসঙ্গে কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মন্ডল জানান, শহিদুলকে পুষ্টি কার্ড দিতে না চাইলে সে অকথ্য গালিগালাজ করে আমার উপর চড়াও হয়। পরে লোকজন তাকে রুমে আটকে রাখলে পুলিশ এসে নিয়ে যায়। টাকা নেয়ার বিষয়টি সম্পুর্ণ মিথ্যা।

ফুলবাড়ী  থানার এস আই প্রভাত চন্দ্র জানান, আহত অবস্থায় চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে বাড়ীতে এবং শহিদুলকে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মুনিয়া

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন