যশোরে কলেজ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা
মানসিক ভারসাম্যহীন এক কলেজ শিক্ষার্থী বোরহান কবির (১৮) মারা গেছেন। যশোরের মণিরামপুরে সাইকেল রাখা কেন্দ্র করে বোরহান কবির মারপিটের শিকার হন।
রোববার (০৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে মণিরামপুর উপজেলার খালিয়া এলাকায় তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয় ।
এই ঘটনায় পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নাইম হোসেন (২৪) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি মণিরামপুর উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে।
নিহত বোরহান মণিরামপুর হাসপাতাল সংলগ্ন মোহনপুর গ্রামের আহসানুল কবিরের ছেলে। তিনি মণিরামপুর সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। ১৫ থেকে ২০ দিন আগে ভয় পেয়ে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে বলে পরিবারের দাবি।
গ্রামের হাবিবুর রহমান হবি জানান, শনিবার সকালে সাইকেল চালিয়ে খালিয়ায় যান বোরহান।
ওই সময় রাস্তায় মোটরসাইকেল থামিয়ে নাইম মোবাইলে কথা বলছিলেন। তখন বোরহান নিজের সাইকেল রেখে নাইমের কাছে মোটরসাইকেলের চাবি চান।
ওই সময় তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে রাস্তার পাশ থেকে লাঠি নিয়ে বোরহানকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। পরে আশপাশের লোকজন রাজগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেয়। বেলা ১১টার দিকে পুলিশ বোরহান ও নাইমকে নিয়ে যায়।
নিহতের বাবা আহসানুল কবিরের অভিযোগ, সাইকেল রাখা নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ২ থেকে ৩ জন আমার ছেলেকে মারপিট করে রক্তাক্ত করে।
পরে পুলিশ ছেলেকে ধরে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। বোরহানের মাথা ফেটে রক্ত বের হলেও তাকে হাসপাতালে না পাঠিয়ে পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে ক্যাম্পে বসিয়ে রাখে। খবর পেয়ে আমরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তাকে আনতে গেলেও পুলিশ তাকে ছাড়েনি।
আহসানুল কবির বলেন, ১৫ থেকে ২০ দিন আগে ভয় পেয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ হয় বোরহান। তার চিকিৎসা চলছিল। পুলিশকেও জানানো হয়, সে মানসিক রোগী। পরে বাড়ি থেকে কাগজপত্র নিয়ে দেখালে দুপুর ১টার দিকে তাকে মণিরামপুর হাসপাতালে আনা হয়।
অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ওই সময় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন ডাক্তার। সেখানে চিকিৎসা না হওয়ায় ঢাকায় নেওয়া হয় বোরহানকে। ভোররাতে ঢাকায় পৌঁছানোর আগেই ছেলে মারা যায়।
এদিকে মারপিটের ঘটনায় আটক নাইমকে আসামি করে শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে মণিরামপুর থানায় মামলা করেন বোরহানের বাবা।
মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বোরহান কবিরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এ ছাড়া আটক নাইমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
এস মুন্নী