আর্কাইভ থেকে নারী ও শিশু

দেশের সাড়ে ৩ কোটি শিশুর রক্তে ক্ষতিকর সিসা

সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, দেশের সাড়ে তিন কোটির বেশি শিশুর রক্তে ক্ষতিকর সিসা রয়েছে। এর প্রভাবে বুদ্ধিমত্তা কমে যাওয়াসহ শিশুরা বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।

ইউনিসেফের উদ্যেগে যৌথভাবে গবেষণাটি পরিচালনা করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং আন্তর্জাতিক উদারময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআর,বি)।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধবিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) নির্ধারিত মাত্রা ৩ দশমিক ৫ মাইক্রো গ্রাম। এর চেয়ে বেশি সিসা কারও শরীরে থাকলে তা ক্ষতিকর বলে বিবেচিত হয়।

সেমিনারে আইইডিসিআর-এর গবেষক নওরোজ আফরিন বলেন, টাঙ্গাইল, খুলনা, সিলেট ও পটুয়াখালীর শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। পরীক্ষার আওতায় আসা ৯৮০ শিশুর সবার রক্তে সিসার উপস্থিতি মিলেছে। এরমধ্যে ৬৫ শতাংশ শিশুরই রক্তে সিসার মাত্রা ৩ দশমিক ৫ মাইক্রো গ্রামের বেশি। এছাড়া দুই থেকে চার বছর বয়সী শিশুদের শতভাগের শরীরেই সিসার উপস্থিতি মিলেছে।

অন্যদিকে আইসিডিডিআর,বির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় তারা ৫০০ শিশুর রক্ত পরীক্ষা করেছে। সবার শরীরেই সিসার উপস্থিতি মিলেছে।

এছাড়া বাজারের ৩৬৭টি পণ্যের মধ্যে ৯৬টি পণ্যে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। চারটি শহরে স্থানীয়ভাবে তৈরি খেলনা, রং, অ্যালুমিনিয়াম ও সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল, সবজি, চাল এবং মসলার নমুনায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া যায়। চারটি শহরের মধ্যে আছে ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী ও খুলনা। এছাড়া মাটি, ছাই, পোড়া মাটি ও হলুদের গুঁড়ায় সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে।

গবেষকরা বলছেন, সিসার প্রভাবে শিশুরা বুদ্ধিমত্তা ও মনযোগ কমে যাওয়াসহ লেখাপড়ায় দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়া ছোটবেলা থেকে যাদের শরীরে সিসা রয়েছে, তারা ভবিষ্যতে আগ্রাসী হয়ে উঠেতে পারে।

এ ছাড়া গবেষণায় গ্রাম এলাকার ৩০ শতাংশ গর্ভবতী নারীর শরীরে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর কারণ হিসেবে সিসামিশ্রিত হলুদের গুঁড়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন