ঢোল-বাদ্য বাজিয়ে গায়েহলুদের পর কুকুরের বিয়ে
ব্যাঙের বিয়ে, শিয়ালের বিয়ের কথাতো কতোই শুনেছেন। এবার হয়েছে কুকুরেরও বিয়ে ।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের গুরগাঁওয়ে। ওই গ্রামের এক দম্পতি বেশ ধুমধাম করে তাদের কুকুরের বিয়ে দিয়েছেন। অনুসরণ করেছে ভারতীয় বিয়ের অনুষ্ঠানের সকল রীতিনীতি। গায়েহলুদ থেকে শুরু করে, সাত পাক ঘোরা কোনোটাই বাদ যায়নি। দাওয়াত করা হয়েছিল ১ শতাধিক মানুষকে। তারা এসেছিলেনও কুকুরের বিয়ের অনুষ্ঠানে।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
মর্দা কুকুরটির নাম শেরু। সেটির কনের নাম সুইটি। গুরগাঁওয়ের পালাম বিহার এক্সটেনশনের জিলে সিং কলোনির দুই দম্পতির দুই কুকুরের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে আজ। সাত পাকেও ঘোরানো হয়েছে দুই কুকুরকে। বরযাত্রী হিসেবে প্রতিবেশীরাও এসেছিলেন বিয়ের অনুষ্ঠানে।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের সঙ্গে আলাপকালে সুইটির মালিক সবিতা ওরফে রানি বলেন, ‘আমি প্রাণী পুষতে পছন্দ করি এবং আমরা দম্পতি হিসেবে পোষা প্রাণীর যত্ন নিতাম। আমার কোনো সন্তান নেই তাই সুইটিই আমাদের সন্তান। আমার স্বামী প্রায়ই মন্দিরে গিয়ে পশুদের খাওয়াতেন। একদিন একটি কুকুর তাঁকে অনুসরণ করে ৩ বছর আগে আমাদের কাছে এসেছিল। আমরা তাঁর নাম রেখেছি সুইটি। সবাই বলত সুইটির বিয়ে দেওয়া উচিত। আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করেছি এবং অবশেষে মাত্র ৪ দিনের মধ্যে একটি প্রোগ্রাম তৈরি করা হয়েছিল। আমরা সমস্ত আচার পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
এএনাইয়ের সঙ্গে আলাপকালে সবিতা জানিয়েছেন, দুই কুকুরের জন্যই গায়েহলুদের অনুষ্ঠানও করা হয়েছিল। তিনি নিজের হাতে দেওয়া মেহেদিও দেখান প্রতিবেদককে।
এদিকে, শেরুর মালিক মনিতা বলেছেন, ‘গত আট বছর ধরে শেরু আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমরা সব সময় তার সঙ্গে আমাদের সন্তানের মতো আচরণ করেছি। আমরা আমাদের কুকুরের বিয়ে নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছিলাম কিন্তু হঠাৎ করেই আমরা বিষয়টি নিয়ে সিরিয়াস হয়ে যাই।’
মনিতা আরও জানান, দুই কুকুরের মালিকেরাই বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছেন এবং বিয়ের জন্য যা যা করণীয় তার সবকিছু করার প্রস্তুতি নিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা ২৫টি কার্ড ছাপিয়ে ১০০ জনকে দাওয়াত করেছিলাম। এর মধ্যে অনেককেই অনলাইন দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল।’
প্রতিবেশীরা শেরু এবং সুইটির বিয়ে নিয়ে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে মনিতা বলেন, ‘কিছু মানুষ এটা পছন্দ করেছে এবং কিছু মানুষ করেননি। তবে তা নিয়ে আমরা মোটেও উদ্বিগ্ন নই। আমরা যা চেয়েছি কেবল তাই করে গিয়েছি।’ মনিতার কথার সূত্র ধরে সবিতা বলেন, ‘লোকেরা বলত যে পুলিশ আমাদের তুলে নিয়ে জেলে ঢোকাবে কিন্তু আমরা মাথা ঘামাই না। যেহেতু আমরা নিঃসন্তান দম্পতি এবং এটিই আমাদের একমাত্র সুখ তাই আজ আমার স্বামী এবং আমি সুইটির বিয়ে নিয়ে অনেক বেশি খুশি।’