আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

হেফাজতের নতুন কমিটি ঘোষণা, কমিটিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলোচিত ২ নেতা

আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির ও মাওলানা নুরুল ইসলামকে মহাসচিব করে হেফাজতে ইসলামের ৩৮সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর এ কমিটি আলোচিত হেফাজতে ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির দুই নেতা সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি মোবারক উল্লাহও স্থান পেয়েছেন।

সোমবার (৭ জুন) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ধর্মভিত্তিক এই সংগঠনের ঘোষিত ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটিতে মাওলানা সাজিদুর রহমানকে যুগ্ম মহাসচিব এবং মুফতি মুবারক উল্লাহকে সম্মানিত সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সাজিদুর রহমান হেফাজতের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমির ছিলেন। সোমবার কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণাকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাজিদুর রহমানকে বর্তমান মহাসচিবের পাশে দেখা গেছে। 

এদিকে, ২৬-২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় প্রধান হোতা হিসেবে মাওলানা সাজিদুর রহমান ও মুফতি মোবারক উল্লাহকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আসছে জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। এই দুজনকে প্রধান আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। কিন্তু মামলাটি এখনো নথিভুক্ত না করায় জেলা শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা।

হেফাজতের এই দুই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর পক্ষে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তি। তাণ্ডবের ঘটনার পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠার পর মাওলানা সাজিদুর রহমান ও মুফতি মোবারক উল্লাহ এক প্রকার আত্মগোপনে রয়েছেন।

হেফাজতের আমির ও হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মারা যান। এর পর নানান আলোচনার মধ্যে ১৫ নভেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে বাবুনগরীকে আমির করে হেফাজতের ১৫১ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। ১৫১ সদস্যের ওই কমিটিতে আহমদ শফীর অনুসারীরা কেউ জায়গা পাননি।

তবে নতুন কমিটি গঠনের ছয় মাস পার হওয়ার আগেই নরেন্দ্র মোদির সফরকেন্দ্রিক বিক্ষোভ থেকে সহিংসতার ঘটনার পর পুলিশি অভিযানে চাপে থাকা হেফাজতের সেই কমিটি এ বছরের ২৫ এপ্রিল রাতে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত তিনদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা। তাণ্ডব চলাকালে তারা সরকারি-বেসরকারি অন্তত অর্ধশত স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সব ঘটনায় মোট ৫৬টি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাগুলোতে এজাহারনামী আসামির সংখ্যা ৪১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০শ থেকে ৩৫ হাজার জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ গত আড়াই মাসে অন্তত পাঁচ শতাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

শেখ সোহান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন