বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে মহিষের গাড়ীতে বিয়ে
বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে মহিষের গাড়ীতে চরে বিয়ে করে নববধূকে ঘরে তুললেন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার উমর ফারুক। বর উমর ফারুকের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা মুসুল্লি পাড়া এলাকায়। তিনি ওই এলাকার ফজলুল হকের ছেলে।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে মহিষের গাড়ীতে করে বিয়ে করতে যান পাশ্ববর্তী জেলা লালমনিরহাট সদর উপজজেলা কুলাহাট এলাকায়।
বর উমর ফারুক জানান, আমার বাপ-দাদারা বিয়ে করেছেন কেউ হাতির পিঠে চরে, কেউ মহিষের গাড়ীতে চরে।
বংশের সেই পুরাতন ঐতিহ্য ধরে রাখতে তিনিও মহিষের গাড়ীতে চরে বিয়ে করবেন বলে স্বপ্ন দেখেন। তিনি সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন ও বংশের ঐতিহ্য ধরে রাখতে দুইটি মহিষের গাড়ীতে করে প্রায় ১০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে কুলাহাট ইউনিয়নের ডেবডেমি এলাকার বেলাল হোসেনের মেয়ে বিলকিস আক্তারের সঙ্গে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিয়ে সম্পন্ন করেন। দুইটি মহিষের গাড়ী ছাড়াও পাঁচটি মোটরসাইকেল, দুইটি মাইক্রো বাস যোগে বরযাত্রী যান।
নববধূ বিলকিস আক্তার জানান, আমি বাপ-দাদার কাছে শুনেছি, যে আজ থেকে প্রায় ৩০-৪০ বছর আগে শুধু মহিষের গাড়ীতে চরে বিয়ে নয়, সেসময় মানুষের একমাত্র চলাচলের বাহন ছিল মহিষের গাড়ী।
তিনি জানান, আমার স্বামী তার বংশের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য ডিজিটাল যুগে এসেও মহিষের গাড়ীতে চরে আমাকে বিয়ে করে নিয়ে যান। আমি এটা কখনও ভাবিনি মহিষের গাড়ীতে চরে নববধূ হয়ে স্বামীর ঘরে যাবো। সত্যি আমার কাছে খবুই ভাল লেগেছে।
ঘটক রাজু সরকার জানান, ছেলে ও তার পরিবারের ইচ্ছা ও তাদের বংশের ঐতিহ্য ফিরে আনতে ছেলেকে মহিষের গাড়ীতে চরে বিয়ে করতে যান। ২৫ থেকে ৩০ বছর পর মহিষের গাড়ীতে চরে বিয়ে করতে যাওয়ার সময় বর ও কনের বাড়িতে শতশত মানুষের ঢল নামে। এমন কি যখন পাত্র মহিষের গাড়ীতে বিয়ে করতে কনের বাড়ির উদেশ্যে রওনা হন। তখন ফুল দিয়ে সাজানো মহিষের গাড়ীতে বরকে এক নজর দেখেন। পাশাপাশি বরসহ মহিষের গাড়ীর অনেকেই ছবি তুলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকে ছাড়েন। সব মিলে মহিষের গাড়ীতে চরে বর বিয়ে করতে যাওয়ায় সেই হারানো দিনগুলি কথা অনেকের মনে পড়ে যায়। সেই সঙ্গে পুরাতন ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য সকালকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।