আর্কাইভ থেকে বলিউড

বিয়ে করিনি, লিভ টুগেদার করেছি : নুসরাত

ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন নুসরাত জাহান ও নিখিল জৈন। ধর্ম আলাদা, কিন্তু সেই বিভেদ বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি এই জুটির প্রেম কাহিনিতে। এরপর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেই তুরস্কের বোদরুমে রূপকথার বিয়ে সেরেছিল এই জুটি। তবে বছর যেতে না যেতেই স্বপ্নের বিয়ের এমন পরিণতি হবে কে জানত? 

আগামী ১৯ জুন নুসরাত-নিখিলের বিয়ের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি। তবে ছারখার হয়ে গেছে তাদের সংসার। চলতি বছরের শুরু থেকেই নিখিলের সঙ্গে নুসরাতের বিচ্ছেদের পাশাপাশি যশ দাশগুপ্তের সঙ্গে নায়িকার প্রেমের গুঞ্জন শোনা গেছে। সেই গুঞ্জন সম্প্রতি আরো একধাপ এগিয়ে যায়। গত সপ্তাহেই প্রকাশ্যে আসে- মা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নুসরাত, কোনো কোনো সূত্র এমনটাও দাবি করে, নুসরাত অন্তঃসত্ত্বা। 

নিখিলের সঙ্গে তার সম্পর্কের নিরিখে অবশেষে মুখ খুললেন নুসরাত। তুরস্কে বিয়ে হয়েছিল তাদের। সেই প্রসঙ্গ টেনে নুসরাত জানালেন, তুরস্কের বিবাহ আইন অনুসারে এই অনুষ্ঠান অবৈধ। উপরন্তু হিন্দু-মুসলিম বিবাহের ক্ষেত্রে বিশেষ বিবাহ আইন অনুসারে বিয়ে করা উচিত। যা এ ক্ষেত্রে মানা হয়নি। ফলত, এটা বিয়েই নয়। বুধবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করে নিজের যুক্তি প্রকাশ্যে আনলেন অভিনেত্রী ও সংসদ সদস্য নুসরাত জাহান। তিনি বললেন, ‘নিখিলের সঙ্গে আমি সহবাস করেছি। বিয়ে নয়। ফলে বিবাহবিচ্ছেদের প্রশ্নই ওঠে না।'

ইতোমধ্যে জানা গেলো মা হবেন নুসরাত। অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় কী? পাঁচ দিন ধরে অভিনেত্রী এবং সংসদ সদস্য নুসরাত জাহানকে নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। শুধু তা-ই নয়, নিখিলের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে না কেন, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে চার দিক থেকে। 

নুসরাত জাহানের এমন বক্তব‌্য প্রকাশ‌্যে আসার পর টলিপাড়ায় তোলপাড় শুরু হয়। কিন্তু ভারতের সরকারি নথিতে দেখা যায়, নুসরাত জাহান বিবাহিত। স্বামীর নাম নিখিল জৈন। তারা বিয়ে করেছেন ২০১৯ সালের ১৯ জুন। লোকসভার ওয়েবসাইটে পশ্চিমবঙ্গ থেকে জয়ী তৃণমূল সাংসদদের তালিকায় নুসরাতের নামে ক্লিক করলেই এসব তথ্য বেরিয়ে আসছে। 

এখন প্রশ্ন উঠেছে, নুসরাত জাহান যদি বিবাহিত না হয়ে থাকেন তবে নিখিলের স্ত্রী হিসেবে তাকে কেন পরিচয় করা হচ্ছে? নিয়ম অনুযায়ী, সংসদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ওয়েবসাইটে পরিচয় দেয়া হয়। তবে গত লোকসভা ভোটের আগে লোকসভা নির্বাচন কমিশনকে যে হলফনামা দিয়েছিলেন তাতে নিজেকে অবিবাহিত দাবি করেছিলেন নুসরাত। তবে বিয়ের যে তারিখ লোকসভার ওয়েবসাইটে রয়েছে তা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরের বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ‌্যম।

এমনকি লেখিকা তসলিমা নাসরিনও নুসরাতের নীরবতা নিয়ে কথা বলেছিলেন নেটমাধ্যমে। লিখেছিলেন, ‘…এই যদি পরিস্থিতি হয়, তবে নিখিল আর নুসরাতের ডিভোর্স হয়ে যাওয়াই কি ভালো নয়? অচল কোনো সম্পর্ক বাদুড়ের মতো ঝুলিয়ে রাখার কোনো মানে হয় না। এতে দুই পক্ষেরই অস্বস্তি।'

দুই দিন আগে নিখিল জানিয়েছিলেন, নুসরাতের বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা দায়ের করেছেন তিনি। নিখিলের কথায়, ‘যেদিন জানলাম, নুসরাত আমার সঙ্গে থাকতে চায় না, অন্য কারো সঙ্গে থাকতে চায়, সেদিনই দেওয়ানি মামলা দায়ের করেছি আমি। নুসরাতের মা হওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নিইনি আমি।’ এমনকি আগামী জুলাই মাসে যে আদালতে এই মামলার শুনানি, নিখিল সে কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন।

বিবৃতি জারি করেই বুধবার (৯ জুন) নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে নুসরাত লিখেছেন, ‘যে নারী সব শুনেও নীরব থাকেন, এ রকম পরিচয়ে পরিচিত হব না আমি।' তার বিরুদ্ধে উঠে আসা অসংখ্য বিরোধী স্বরের মুখোমুখি হলেন নায়িকা।  

আগামী ২০ জুলাই শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

এস 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন