আর্কাইভ থেকে ফুটবল

ব্রাজিলকে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করলো ক্যামেরুন

কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের নকআউট পর্ব আগেই নিশ্চিত করেছিলো ব্রাজিল। ব্রাজিল কোচ তিতে পুরো দলটাই বলতে গেলে বদলে দিলেন। এডার মিলিতাও এবং ফ্রেড আগের ম্যাচের একাদশে থাকলেও তারা মূলত প্রথম একাদশের ফুটবলার নন। তাদেরসহ ধরলে পুরো ১১জনই দ্বিতীয় সারির দল। দশ পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেও পুরো ম্যাচে একের পর এক আক্রমণ করেছে সেলেসাওরা। তবে আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সব আক্রমণ প্রতিহত করে দেয়।

শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টায় কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল-ক্যামেরুন।

কোপা আমেরিকার ফাইনালের পর ১৬ ম্যাচ আর বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে সতেরো ম্যাচ পর হারলো ব্রাজিল! গোলশূন্য ড্র হওয়ার কথা যে ম্যাচের সে ম্যাচের চেহারা বদলে গেলো এক মুহূর্তে! ভিনসেন্ট আবুবাকারের অবিশ্বাস্য এক গোলে ফুটবল পরাশক্তি ব্রাজিলকে হারিয়েছে আফ্রিকার অদম্য সিংহ ক্যামেরুন। ব্রাজিলকে বিশ্বকাপে পরাজয়ের স্বাদ দেয়া প্রথম ও একমাত্র আফ্রিকান দল এখন ক্যামেরুন। নিঃসন্দেহে ক্যামেরুনের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবময় রাতগুলোর একটি এটি।

পুরো প্রথমার্ধ ব্রাজিল প্রায় একক আধিপত্য চালিয়েছিল। শুরু থেকেই ক্যামেরুনের বুকে কাঁপন ধরানো সব আক্রমণ করতে থাকে তিতে শীষ্যরা। ব্রাজিলের গোলমুখী ১০টি শটের বিপরীতে ক্যামেরুন গোলে শট করেছিল একটি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে একমাত্র গোলটি পায় ক্যামেরুন। যেটি ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দিয়েছিল।

ম্যাচের ১৪ মিনিটে ফ্রেডের ক্রস থেকে আসা মার্টিনেল্লির হেডে প্রথম গোলটি পেতে পারতো ব্রাজিল। কিন্তু ক্যামেরুনের গোলরক্ষক ইপ্যাসির নৈপূণ্যে সে দফায় শুধু একটি কর্নার নিয়ে সন্তষ্ট থাকতে হয় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

ম্যাচের ২২ থেকে ২৪ মিনিটের মধ্যে বল ছিলো ক্যামেরুনের গোলপোস্টের আশেপাশেই। এ সময় সেখানে ৩ দফা আক্রমণ চালান অ্যান্টনি-মার্টিনেল্লিরা।

ম্যাচের ২৮ মিনিটে বল নিয়ে ক্যামেরুনের গোলবারের দিকে এগোচ্ছিলেন রদ্রিগো; এ সময় গোল থেকে মাত্র ২৫ গজ দূরে তাকে বাজেভাবে ট্যাকল করায় হলুদ কার্ড দেখেন ক্যামেরুনিয়ান মিডফিল্ডার পিয়েরে কুন্ডে। ৩২ মিনিটের সময় আবারও একই জায়গায় রদ্রিগোকে ফাউল করেন ক্যামেরুনিয়ান লেফট ব্যাক কলিন্স ফাই। আগের ম্যাচেও হলুদ কার্ড দেখায় তার দল পরের রাউন্ডে গেলেও তিনি আর সে ম্যাচে খেলতে পারবেন না।

৪৭ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণ থেকে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিলো ক্যামেরুন। এটি এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের গোলপোস্টে প্রতিপক্ষের প্রথম অন টার্গেট শট। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে স্কোরলাইনে আর কোনো পরিবর্তন না আসায় ০-০ ব্যবধান নিয়েই বিরতিতে যায় দুইদল।

ব্রাজিল আক্রমণের ধারা বজায় রাখলেও কেউ শেষটা ভালো করতে পারছিলেন না। ফলে গোলও আসেনি। ৫৬ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল জেসুসের পাসে ব্রাজিল স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি ডান পায়ের দুর্দান্ত শট নিয়েছিলেন গোলে। তবে গোলরক্ষক ডেভিস এপাসি দলকে গোল হজম করা থেকে বাঁচিয়েছিলেন। ৫৮ মিনিটে এডার মিলিটাও ব্যর্থ হয়েছেন গোল করতে।

ডাগআউটে বসে খেলা দেখছিলেন থিয়াগো সিলভা, মারকুইনহোস, রিচার্লিসন, ভিনিসিয়ুস জুনিয়রসহ অনেকে। তবে তারকা ছাড়া দলকে হারের মুখ দেখতে হয়েছে। ব্রাজিলের প্রচণ্ড ফিনিশিং অভাব বোধ হচ্ছিল পুরো ম্যাচ জুড়ে। অভিজ্ঞ দানি আলভেস- গ্যাব্রিয়েল জেসুসরা কিছুই করতে পারেননি এদিন।

আগামী ৫ ডিসেম্বর রাত ১টায় স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন