আর্কাইভ থেকে করোনা ভাইরাস

ভারতে এবার ডেল্টা প্লাস আতঙ্ক

প্রতিনিয়ত রূপ বদল করছে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা। মিউটেশনের মাধ্যমে আরো একটি নতুন মারাত্মক স্ট্রেইন তৈরি করেছে এটি। এর নাম দেওয়া হয়েছে ডেল্টা প্লাস বা এওয়াই.১ ভ্যারিয়েন্ট।

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে দায়ী করা হয়। এখন ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।

মঙ্গলবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন এই ধরণ তৈরি হয়েছে। এর নাম ডেল্টা প্লাস বা এওয়াই ওয়ান ভ্যারিয়েন্ট রাখা হয়েছে। ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ককটেল ট্রিটমেন্টের বিরুদ্ধে টিকে থাকতে সক্ষম। অর্থাৎ এ স্ট্রেইনের ওপর ককটেল ইনজেকশনের প্রভাব ইতিবাচক নয়। এটি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি আটকে দিতে পারে। সম্প্রতি এই চিকিৎসা পদ্ধতি শনাক্ত করেছে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্র্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন।

করোনার নতুন শনাক্ত ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে একজন জিনোম সিকোয়েন্সিং বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এর মধ্যে ডেল্টার এই সিকোয়েন্সের স্পাইক মিউটেশন পাওয়া যেতে পারে। এখনও পর্যন্ত ১০টি দেশে খুঁজে পাওয়া গেছে এই জিনোম। সম্প্রতি এই সিকোয়েন্স নতুন বংশবিস্তার করেছে যাকে বলা হচ্ছে ডেল্টা প্লাস। এটি ডেল্টার মতোই ভাইরাস। ডেল্টা প্লাস এমন একটি মিউটেশন যা বিটা ভ্যারিয়েন্টের মধ্যেও পাওয়া যায়।

সম্প্রতি এক তথ্যে পাবলিক হেল্থ ইংল্যান্ড জানিয়েছে, সাত জুন পর্যন্ত ভারতে ৬টি জিনোমের মধ্যে পাওয়া গেছে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট। স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ৬৩টি জিনোম রয়েছে, যার মধ্যে নতুন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট মিউটেশন উপস্থিত।

দিল্লির ইনস্টিটিউট অব জেনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টেগ্রেটিভ বায়োলজির এক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, দ্রত সংক্রমিত হয় ভ্যারিয়েন্ট প্লাস। এজন্য ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনই দায়ী। এটি এমন এক ধরনের ভ্যারিয়েন্ট যা মানুষের কোষে প্রবেশ করে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটায়।

অবশ্য এখনো এই স্ট্রেইন ব্যাপকভাবে সংক্রমণ ছড়ায়নি ভারতে। তাই এ নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছে, ডেল্টা প্লাস পুরোনো ভ্যারিয়েন্ট থেকে অনেক বেশি সংক্রামক। ফলে এ নিয়ে সরকারকে আগেভাগে ব্যবস্থা নিতে হবে।

চলতি বছরের মার্চ থেকে অধিক সংক্রামক এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের বিশেষজ্ঞ বিনীতা বল জানিয়েছেন, ডেল্টার নতুন এই রূপ কতটা সংক্রামক এবং কত দ্রুত ছড়ায় তা দেখার বিষয়।

ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর অ্যামেরিকায় এর সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ব্রিটেনে ৬৩ জনের শরীরে করোনার নতুন স্ট্রেইনের খোঁজ মিলেছে। ভারতে শনাক্ত হয়েছে ছয়জনের শরীরে। করোনার নতুন এ ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলেছে কানাডা, নেপাল, জার্মানি, পোল্যান্ড, জাপান, পর্তুগাল, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, রাশিয়ায়ও। যুক্তরাষ্ট্রেও আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ১৪ জন।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন