আর্কাইভ থেকে ফুটবল

মরক্কোর রূপকথা থামলো ফ্রান্সে

মরক্কোর লাল উৎসবের বদলে হলো ফরাসি উল্লাস। পুরো ম্যাচেই যেন আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসেছিল মরক্কো। কিন্তু গতিশীল ফ্রান্সের সামনে কাজে আসেনি সেই আক্রমণ। গোল করতে পারেনি বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠা আফ্রিকান দলটি। আবারো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) কাতারের আল বায়াত স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে থিও হার্নান্দেজ ও রানডাল কুলু মুয়ানির গোলে ২-০ গোলে আফ্রিকার দেশ মরক্কোকে পরাজিত করে ফাইনালে পা রাখে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

কাতার বিশ্বকাপের শুরু থেকেই একের পর এক চমক দিয়ে যাচ্ছিল মরক্কো। আফ্রিকার প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠে স্বপ্ন দেখিয়েছিল শিরোপা মঞ্চে ওঠার। কিন্তু ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বাধা কাটিয়ে উঠতে পারলেন না আশরাফ হাকিমিরা। মরক্কোর স্বপ্নযাত্রা থামিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল।

সেমিফাইনালে অবশ্য নেমেই ইতিহাস গড়ে ফেলে মরক্কো। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম কোনো আফ্রিকান দেশ শেষ চারের মঞ্চে নামে তারা। কিন্তু শুরুতেই মলিন হয় অর্জন। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। প্রথমার্ধের এই গোলই ব্যবধান গড়ে দেয়।

এই ম্যাচের আগ পর্যন্ত মরক্কোর জালে বল পাঠাতে পারেনি কোনো দলই। সেই ডেডলক ভাঙতে ফ্রান্স সময় নেয় মাত্র ৫ মিনিট। দুর্দান্ত শৈলীর মাধ্যমে গোল করেন ফরাসি মিডফিল্ডার থিও হার্নান্দেজ। ষষ্ঠ ম্যাচে এসে প্রথম গোল হজম করেন মরক্কান গোলরক্ষক বনো। গোল করে আরও আগ্রাসী হয় ফ্রান্স। ১৭ মিনিটে অলিভিয়ের জিরুদের শট বারপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ৩৫ মিনিটে এমবাপ্পে জিরুদের যৌথ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। আরও কয়েকটি আক্রমণ শানালেও এরপর আর ভাঙতে পারেনি মরক্কোর রক্ষণ।

২০ মিনিটে চোটের কারণে মাঠ ছাড়েন মরক্কো অধিনায়ক রোমান সাইস। গোল খেয়ে মরক্কো যেন জেগে ওঠে। নিজেদের রক্ষণ সামলে বারবার আক্রমণে ওঠে তারা। মরক্কান তারকা আজ্জেদিন ওউনারির দারুণ এক শট চমৎকারভাবে সেভ করেন ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লরিস।

৪৪ মিনিটে কর্ণার থেকে বাইকেল কিকে গোল প্রায় পেয়েই বসেছিল মরক্কো। জাওয়াদ আল ইয়ামিকের কিক লরিসকে পরাস্ত করলেও বারে আটকা পড়ে। প্রথমার্ধে আক্রমণাত্মক ফুটবলের প্রদর্শনী দেখিয়েছে দুই দলই।

দ্বিতীয়ার্ধেও দেখা যায় দারুণ লড়াই। গোল খেয়েও আত্মবিশ্বাস একটুও টলেনি মরক্কোর। একের পর এক আক্রমণে ফরাসি ডি বক্স তাতিয়ে তোলে মরক্কো। কিন্তু বারবার ফরাসি গোলকিপারের কাছে হতাশ হতে হয়। উল্টো ফ্রান্সের গতির কাছে তাদের হার মানতে হয়। ম্যাচের ৮০তম মিনিটে বদলি হয়ে নেমেই ব্যবধান গড়ে দেন কোলো মুয়ানি। প্রতিপক্ষের ডি বক্সে এমবাপ্পেদের বানিয়ে দেওয়া বলে পা ছুঁয়েই স্কোরবোর্ডে নাম লেখান তিনি। মাঠে নামার মাত্র ৪৪ সেকেন্ডের মাথায় গোল করে বনে যান নায়ক।

দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি মরক্কো। ফ্রান্সের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয় আশরাফ হাকিমিদের। অন্যদিকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠার আনন্দে ভাসে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন