সরকারি ব্যবস্থাপনায় রোমানিয়া যাচ্ছেন ৩০ বাংলাদেশি
প্রথমবারের মতো সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের দেশ রোমানিয়ায় ৩০ জন কর্মী যাচ্ছেন। আগামী ২১ ও ২২ ডিসেম্বর ১৫ জন করে দুই ধাপে এসব কর্মী দেশটির উদ্দেশে ঢাকা থেকে রওনা হবেন।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে রোমানিয়াগামীদের জন্য প্রাক বহির্গমন বিষয়ক এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)।
অনুষ্ঠানে বোয়েসেল জানায়, রোমানিয়ার সুমনা স্পোটর্স ওয়ার, ইউরোপা ফ্যাশনস লিমিটেড এবং সংস্থাটির মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে এসব কর্মী দেশটিতে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩১২ জন কর্মীর চাহিদাপত্র পেয়েছে বোয়েসেল। এদের মধ্যে ১০২ কর্মীর ভিসা পাওয়া গেছে এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণব্যুরোর (বিএমইটি) স্মার্ট কার্ড শেষ করা হয়েছে। বাকিদের ভিসা প্রক্রিয়াধীন।
বিএমইটি বলছে, দুই বছর মেয়াদে এসব কর্মী রোমানিয়াতে স্যুইং মেশিন অপারেট, কাটিং অপারেটর, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন পদ অনুযায়ী কর্মী সর্বনিম্ন ৪০০ থেকে ৫০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত বেতন পাবেন। তাদের আবাসন, খাবার, চিকিৎসা খরচ কোম্পানি বহন করবে। চাকরির মেয়াদ দুই বছর হলেও কর্মীরা চুক্তি নবায়ন করতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, কর্মীদের বিমান ভাড়া, ইউরোপা ফ্যাশনের সার্ভিস চার্জ, বোয়েসেলের সার্ভিস চার্জ তথা ভারত থেকে ভিসার ব্যবস্থাসহ মোট খরচ পড়বে ২ লাখ ৩১ হাজার ২৪০ টাকা। এসব খরচ কর্মীকে বহন করতে হবে। কর্মী প্রতি জামানত বাবদ ৫০ হাজার টাকা বোয়েসেলে জমা থাকবে এবং শ্রম চুক্তি শেষে কর্মীরা জামানত ফেরত পাবে। এছাড়া ইউরোপা ফ্যাশন লিমিটেড তাদের সার্ভিস চার্জের শতকরা ১০ ভাগে বোয়েসেলে জামানত রাখবে এবং কর্মীর চাকরি স্থায়ী হওয়ার পর তা ফেরত পাবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, বোয়েসেলের মাধ্যমে রোমানিয়াসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
তিনি বিদেশগমনেচ্ছু কর্মীদেরও দেশের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ ও কাজে মনোযোগী হয়ে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান।
রোমানিয়া যেতে কর্মীদের যে খরচ ধরা হয়েছে, তা থেকে আরও কীভাবে কমানো যায় তা দেখার জন্য বোয়েসেলসহ সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মোটা যে অংকের কথা বলা হচ্ছে, সেখান থেকে কিছুটা কমিয়ে আনতে পারলে আমরা কর্মীরা সুবিধা পাবে।
মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, রোমানিয়ায় আমাদের ৫ হাজার কর্মী গেছেন। কর্মীরা যাচ্ছে এটার খুশির সংবাদ। তবে একটা শঙ্কা আছে, ওখানে না থাকা। কর্মীদের কারণে আমরা রোমানিয়ার ধমক খেয়েছি। এ রকম হতে থাকলে নতুন কর্মীর চাহিদা আসবে না।
এ সময় সচিব কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা অন্যত্র চলে যাবেন তাদের পাসপোর্ট বাতিলসহ আমাদের যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমরা নেব। আমাদের কাছে দেশ বড়। দালালের কথায় কেউ রোমানিয়া থেকে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। কেউ ভুল পথে পা দেবেন না।
ইউরোপা ফ্যাশনস লিমিটেডের সিইও জানান, রোমানিয়ার জন্য আরও ১১৫ এবং ৩০০ জন কর্মীর পৃথক চাহিদাপত্র রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল আলম, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।