আর্কাইভ থেকে অপরাধ

ডিবি পরিচয়ে টাকা লুট একটি চক্রে

টার্গেট করা ব্যক্তিকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গাড়িতে তুলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়া একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন- পিযুষ সুর (২৭), মো. হারুন (৩৮), জোবায়ের হোসেন পারভেজ, আরিফ হোসেন (২৯) ও খোকন চন্দ্র দেবনাথ (৪২)।

রোববার (১ জানুয়ারি) মধ্য রাতে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, গেলো ১৩ ডিসেম্বর রাতে এক ভুক্তভোগী রিকশায় করে মতিঝিল সিটি সেন্টার পার হয়ে অলিম্পিয়া বেকারির দিকে যাওয়ার পথে একটি কালো রংয়ের নোহা গাড়ি তার গতিরোধ করে।

এরপর ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার কাছে অবৈধ মালামাল আছে বলে দুই হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে তাকে গাড়িতে তুলে নেয়। তার সঙ্গে থাকা ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

ডিবি কমিশনার বলেন, পরে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে রাজধানীর শাপলা চত্বর, ধোলাইপাড় টোলপ্লাজা, ধলেশ্বরী টোলপ্লাজা কুচিয়ামারা ব্রিজ হয়ে ঢাকা মাওয়া সড়কে পিডিএল ক্যাম্পের সামনে নামিয়ে দিয়ে মাওয়ার দিকে চলে যায় গাড়িতে থাকা লোকজন।

এসময় তাদের কাছ দুটি কালো রংয়ের নোহা মাইক্রোবাস, ১টি সাদা রংয়ের প্রভোক্স প্রাইভেটকার, ২টি পুলিশের রিফ্লেক্টিং ভেস্ট ও ১টি হ্যান্ডকাপ জব্দ করা হয় বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।

হারুন বলেন, ভুক্তভোগী এ বিষয়ে মতিঝিল থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগও ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে। গোয়েন্দা তথ্য এবং প্রযুক্তিগত সহায়তায় কালো রংয়ের নোহা গাড়িটি পশ্চিম নাখালপাড়া থেকে উদ্ধার করা হয়। গাড়ির মালিক ও ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদে, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, এ চক্রটি পারস্পরিক যোগসাজশে প্রাইভেটকার নিয়ে ঢাকা মহানগর এলাকার বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে আসা, ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বের হওয়া এবং মানি এক্সচেঞ্জের ব্যক্তিদের টার্গেট করে। ব্যক্তি শনাক্তের পর ওই ব্যক্তির পেছন পেছন গাড়ি নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নেয়।

গাড়িতে তুলে ভিকটিমের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা পয়সা ও মূল্যবান মালামাল কেড়ে নিয়ে নির্জন স্থানে ফেলে যায়। এ চক্রটি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। এ চক্রের প্রধান শহীদুল ইসলাম মাঝি। তার বিরুদ্ধে সারাদেশে ১৬টি মামলা রয়েছে। এর আগে শহীদুল ইসলাম মাঝিকে ডিবি পুলিশ একাধিকবার গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।

ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকার ঘটনায় পলাতক শহীদুল ইসলাম মাঝিসহ তার অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান ডিবি প্রধান।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন