আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

শরীফ কি দোকানদারিই করে যাবেন? শুনানি ৯ ফেব্রুয়ারি

কোনো নোটিশ ছাড়া যে কোনো কর্মকর্তাকে অপসারণে দুদকের বিধি নিয়ে দুদকের আপিল ও চাকরি থেকে অপসারণের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে বরখাস্ত হওয়া দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের রিটের শুনানি মুলতবি রাখার হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে শুনানির জন্য আগামী ৯ জানুয়ারি নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে। এই সময়ের মধ্যে উভয়পক্ষকে লিখিত যুক্তিতর্ক আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে শরীফের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন দোলন। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।

আদালতে শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাউদ্দিন দোলন বলেন, শরীফ উদ্দিনকে কোনো নোটিশ ছাড়া চাকরি থেকে অপসারণ করেছে। বরখাস্ত হয়ে এখন তিনি দোকানদারি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাহলে তিনি কি দোকানদারিই করে যাবেন? প্রশ্ন রাখেন আইনজীবী।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, কোনো নোটিশ ছাড়া যে কোনো কর্মকর্তাকে অপসারণে দুদকের চাকরি সংক্রান্ত ৫৪(২)বিধি নিয়ে দুদকের আপিল আমরা শুনানি করি। দুদকের আপিল যদি খারিজ হয়ে যায়, তাহলে শরীফের চাকরি ফিরে পাওয়ার দ্বার খুলে যাবে। আর আপিল যদি অ্যালাউ হয় তাহলে ভিন্ন কথা। এরপর আপিল বিভাগ এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৯ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেন।

এর আগে গেলো ১৬ জুন চাকরি থেকে অপসারণের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে বরখাস্ত হওয়া দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের রিটের শুনানি মুলতবি রাখার হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়।

গেলো ২৪ মে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালার ৫৪(২) বিধি নিয়ে আপিল বিভাগে দুদকের একটি আপিল বিচারাধীন থাকায় ওই আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চাকরিচ্যুতির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে শরীফের দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানি মুলতবি করেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

২০০৮ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি অনুযায়ী গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করে দুদক। ওই বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই একজন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার ক্ষমতা দুদকের রয়েছে। এরপরই চাকরিচ্যুতি ও ৫৪(২) বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন শরীফ। গত ১৩ মার্চ চাকরি ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন বরখাস্ত হওয়া দুদকের আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন।

গেলো ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে অপসারণ করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪ (২) তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি অনুযায়ী ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা (যদি থাকে) পাবেন। কমিশনের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।

চট্টগ্রাম কার্যালয়ে কর্মরত থাকাকালে বেশকিছু বড় দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মো. শরীফ উদ্দিন। এরপরই একাধিক মহলের রোষানলে পড়েন বলে অভিযোগ ওঠে।

সর্বশেষ গেলো ৩০ জানুয়ারি পরিবারসহ হত্যার হুমকি পান শরীফ। পরিবারসহ হত্যার হুমকি পাওয়ায় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আইয়ুব খান চৌধুরী ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে সিসি টিভির ফুটেজসহ চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন