আর্কাইভ থেকে ব্যাংকিং ও বীমা

জরুরি পণ্য আমদানিতে ১০০ টাকায় ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশে ডলার সংকট চরমে। এ সংকট দূর করতে জরুরি পণ্য আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) থেকে ডলার সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতেই টান পড়ছে রিজার্ভে। রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ করা হলেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে না। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে প্রতিনিয়ত।

এদিকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি ডলার ১০০ টাকায় বিক্রি করেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। জরুরি পণ্য আমদানির জন্য গেলো মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) এ দামেই দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে ৭৮ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

রিজার্ভের পরিমাণও কিছুটা কমেছে। মঙ্গলবার রিজার্ভ থেকে ৭৮ মিলিয়ন ডলার বিক্রির ফলে রিজার্ভ এখন দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারে। গেলো বছর এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশের রিজার্ভ কমেছে ১২০০ কোটি বা ১২ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ডলার সংগ্রহ করে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে হঠাৎ ডলার সংকটে পড়তে হয় দেশকে। এতে আমদানিতে সংকট তৈরি হয়। আর আমদানি পরিশোধের সুবিধার্থে গেলো ২ বছর ধরে বাজারে ডলার বিক্রি করছে।

এতেও সংকট কাটছিল না। একের পর এক ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যায়। অস্থির বিশ্ববাজারে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধরে রাখার চেষ্টাও করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষ গেলো ৩০ মে থেকে উন্মুক্ত অর্থনীতির নিয়মে বাজারের ওপরই মুদ্রা বিনিময় হার ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর থেকে ব্যাংকগুলো যে কোনো দরে ডলার নির্ধারণ করে বিক্রি করতে পারছে।

সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছিল, ওপেন মার্কেট অনুযায়ী ডলারের দাম ঠিক হবে, ব্যাংকগুলো ঠিক করবে দর। এটা না হলে রেমিট্যান্স কমে যাবার শঙ্কা ছিল। তাই বাজারের ওপর ছেড়ে দিলেও বাংলাদেশ মনিটরিং করে আসছে।

মূলত কোভিড পরিস্থিতির পর থেকে বিশ্বজুড়ে চাহিদা বাড়ায় পণ্যের দামও বাড়তে থাকে। এর মধ্যে ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এতে বৈশ্বিক পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় খরচও বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এসব কারণে মার্কিন ডলারের চাহিদা বাড়তে থাকে। এ কারণে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মুদ্রাও ডলারের বিপরীতে দর হারাতে থাকে।

এদিকে ডলার সংকট কাটাতে বিলাসপণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করা হয়। ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। অতি জরুরি প্রকল্প ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে অর্থায়নে সতর্কতা করা হয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণও (নিজ খরচ ব্যতিত) বন্ধ হয়েছে। বন্ধ রয়েছে নতুন গাড়ি কেনা, বলা হয়েছে পুরনো গাড়ি আট বছরের আগে পরিবর্তন নয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন