আর্কাইভ থেকে জাতীয়

সামনের দিনে সীমান্ত হত্যা কমে আসবে : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশ সরকারকে সীমান্ত হত্যা  বিব্রত করে। এটি বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ককে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে পারে না। সামনের দিনে সীমান্ত হত্যা কমে আসবে। বললন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ।

আজ বুধবার (৪ জানুয়ারি) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ-ভারত অনন্য বন্ধুত্বে হাসিনা-মোদির আমল : গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

সূযবার্তা মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বন্ধ না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এরপর নিজের বক্তব্যে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা (সীমান্ত হত্যা) একটা বিরক্তের জায়গা। এতে কোনো সন্দেহ নেই। এটা আমাদের বিব্রত করে। আমাদের সম্পর্কটাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে না পারার একটা কারণ হলো সীমান্ত হত্যা।

গেলো সপ্তাহে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে তিন বাংলাদেশি মারা যান। বিষয়টি মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) নয়াদিল্লিকে  আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে সরকার।

এ প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘গেলো সপ্তাহে তিন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা কূটনৈতিক চ্যানেলে, আমাদের ভাষায় ভারত সরকারকে জানিয়েছি। আমরা মনে করি, দুই পক্ষের যে চুক্তি আছে বা অন্যান্য যে বোঝাপড়া আছে, আমাদের প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ককে সীমান্ত হত্যা ব্যত্যয় করে, এটা আমরা গতকাল ভারতকে জানিয়েছি। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, এটা নিয়ে আমরা সবসময় সোচ্চার থাকব।’

তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয়ভাবেও যখন আমরা বৈঠকগুলো করি, তখনও দেখা যায়; সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার বিষয়ে সদিচ্ছার কমতি নেই তাদের। এ ব্যাপারে কিন্তু আমরা কনভিন্সড। কিন্তু অপারেশন লেভেলে বলতে পারবে এ ঘটনাগুলো কেন ঘটছে। এগুলো আরও বিশদভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'প্রশ্ন আমাদেরও বিএসএফের গুলি কেন পায়ে বা হাতে লাগছে না। আমরা আশা করব, এটা (সীমান্ত হত্যা) সামনের দিনে কমে আসবে। আমরা খেয়াল করেছি, কিছু কিছু জায়গায় সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। ২০২০, ২১ এবং ২২ সালে ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকার কোনো কোনো জায়গায় মৃত্যু কিন্তু শূন্যের কোটায় নেমেছে। একটিও সীমান্ত হত্যা হয়নি।'

তবে লালমনিরহাট সীমান্ত নিয়ে সরকারের উদ্বেগ রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, লালমনিরহাটের ক্ষেত্রে আমরা একটু ব্যত্যয় দেখছি এবং আমরা বোঝার চেষ্টা করছি। আরেকটু গভীরে গিয়ে ভারতের সঙ্গে সামনের দিনে আলোচনা করব।

দেশের মানুষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নয়াদিল্লির কাছে উপস্থাপনে আওয়ামী লীগ সরকার পিছ পা হয় না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সম্পর্কের সোনালী অধ্যায়ে বাংলাদেশের ১৬ কোটি বা তার বেশি মানুষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অপ্রিয় সত্যটাও ভারতের কাছে তুলে ধরতে আমরা কখনও পিছ পা হই না।

সেমিনারে সূর্যবার্তার উপদেষ্টা পরিচালক অধ্যাপক ওমর সেলিম শেরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দিল্লির বেনেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অয়নজিৎ সেন, দক্ষিণ এশিয়া মৌলবাদ বিরোধী ফোরামের সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, বাসসের প্রধান বার্তা সম্পাদক সমীর কান্তি বড়ুয়া ও দেশ রূপান্তরের প্রধান প্রতিবেদক উম্মুল ওয়ারা সুইটি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন