আর্কাইভ থেকে এশিয়া

ধূসর মক্কা-মদিনা বদলে সবুজ মরুভূমি

ইসলাম ধর্মের অন্যতম দুই পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনা। মানুষের কাছে শহর দুটি মরুর শহর নামেই পরিচিত ছিল এত দিন। কিন্তু এখন দিন বদলেছে। মরুভূমির বিশাল অঞ্চল ছেয়ে গেছে গাছপালায়। স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ পাহাড়-পর্বতজুড়ে সবুজের সমারোহ। মরু অঞ্চলের এমন পরিবর্তনকে ঐতিহাসিক বলছেন বিশ্লেষকরা। স্থানীয়রাও বেশ উপভোগ করছেন সবুজ মরুভূমি।

মরুভূমির ধুসর রঙ বদলে গেছে সবুজে। সৌদি আরবের মক্কা, মদিনা ও জেদ্দার বেশকিছু অঞ্চল ছেয়ে গেছে গাছপালায়। ধূ-ধূ বালুর রাজ্যের এই অভূতপূর্ব পরিবর্তন টের পাওয়া যাচ্ছে মহাশূন্য থেকেও। কীভাবে ধূসর মরুভূমি আর পাহাড়-পর্বত ঢেকে গেছে সবুজের সমারোহে, সেই ছবি ধরা পড়েছে স্যাটেলাইট ছবিতে। অল্প সময়ের ব্যবধানে পরিবর্তনের সেই পার্থক্যটাও বেশ স্পষ্ট।

গেল বছরের ডিসেম্বর থেকেই দফায় দফায় ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে সৌদিতে। চলতি মাসের টানা বৃষ্টিতে কয়েকটি এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে বন্যার, তলিয়ে গেছে সড়কও। দেশটিতে এমন বৃষ্টির ঘটনা বিরল। অনেকেই বলছেন, এমন বর্ষণের ফলেই আরবের পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ মরুভূমিতে জন্ম নিয়েছে গাছপালা। বেশকয়েক বছর ধরেই, মরুভূমিতে সবুজায়নের নানা উদ্যোগ নিচ্ছে সৌদি সরকার। কৃত্রিম পদ্ধতিতে বালুকণা-যুক্ত মাটির উর্বরতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে, অনেক জায়গায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে গাছপালাও লাগানো হচ্ছে।

জর্ডানের আম্মানভিত্তিক আবহওয়া গবেষণা প্রতিষ্ঠান আরাবিয়া ওয়েদারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের পশ্চিমাংশের বড় একটি এলাকায় সবুজ ঘাসের দেখা পাওয়া গেছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার টেরা স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে মক্কা ও মদিনা অঞ্চলের সবুজের চিত্র ধরা পড়েছে।

এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০২২ সালে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে বেশ কয়েকদফা বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অন্যান্য বছরের তুলনায় যথেষ্ট বেশি ছিল এবং বলা যায় অনেকটা ধারাবাহিকভাবেই এই বৃষ্টিপাত হয়েছে।

ঘন ঘন এই বৃষ্টিপাতের কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা দায়ি করছেন, নিম্নচাপ বায়ুপ্রবাহকে, যা মিসর থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর দিকে কোনাকুনি হয়ে এসে সৌদির পশ্চিমাঞ্চলে চলে আসে এবং এর কারণে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট ভূখণ্ডে বায়ুচাপ অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। যার ফলে লোহিত সাগর থেকে সৃষ্ট উচ্চচাপের বায়ু ওইসব অঞ্চলে মেঘ বয়ে আনে যা বৃষ্টিপাত ঘটাতে সাহায্য করে।

আরাবিয়া ওয়েদারের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হওয়ায় বিশেষ করে সৌদি আরবের পশ্চিমাংশে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় সেখানে ঘাসের দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে ঊষ্ণ আবহওয়া এবং প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাতের কারণে অঞ্চলটিতে সবুজের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন