শক্তিশালী পাসপোর্ট তালিকায় তিন ধাপ উন্নতি বাংলাদেশের
যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স’-এর তৈরি করা শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচকে গেলো বছরের তুলনায় উন্নতি ঘটেছে বাংলাদেশের। গেলো বছর এই সূচকে বাংলাদেশ ছিল ১০৪তম অবস্থানে। এবার তিন ধাপ এগিয়ে ১০১তম অবস্থানে উঠেছে।
আজ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিশ্বের ১৯৯টি দেশের পাসপোর্ট সূচক প্রকাশ করে হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স। সূচকের সর্বশেষ এই সংস্করণে কিছু দেশের পাসপোর্ট একই অবস্থানে রয়েছে। এজন্য মোট ১০৯টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
এবারের সূচকে বাংলাদেশের সাথে যৌথভাবে ১০১তম স্থানে রয়েছে লিবিয়া ও কসোভো।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত ইরান, অর্থনৈতিকভাবে বিধ্বস্ত লেবানন ও শ্রীলঙ্কা এবং সংঘাতে জর্জরিত সুদানের পাসপোর্ট বাংলাদেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে। ইরান ৯৯তম, লেবানন, কঙ্গো, শ্রীলঙ্কা ও সুদান যৌথভাবে ১০০তম স্থানে রয়েছে।
হ্যানলি পাসপোর্ট সূচক-২০২৩ অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে বিশ্বের ৪১টি দেশে ভিসা ছাড়া কিংবা অন অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করা যায়।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নেপাল (১০৩তম), পাকিস্তান (১০৬তম) ও আফগানিস্তানের (১০৯তম) তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট। তবে এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে মালদ্বীপ। সূচকে ৬১তম স্থানে থাকা মালদ্বীপের নাগরিকরা ৮৯টি দেশে ভিসামুক্ত অথবা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করতে পারেন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত ৮৫তম স্থানে রয়েছে। ভারতের নাগরিকরা বিশ্বের ৫৯টি দেশে ভিসা ছাড়া কিংবা অন অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করতে পারেন।
অন্যদিকে, গেলো বছরের তুলনায় একধাপ উন্নতি ঘটেছে ভুটানের। ৯০তম স্থানে থাকা ভুটানের নাগরিকরা ৫৩টি দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারেন।
সূচকে গেলো বছরের মতো শীর্ষে রয়েছে জাপান। এই দেশটির নাগরিকরা ভিসা ছাড়াই বিশ্বের ১৯৩টি গন্তব্যে ভ্রমণ করতে পারেন। সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথভাবে সূচকের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এই দুই দেশের পাসপোর্টধারীরা ১৯২টি দেশে ভিসা ছাড়া অথবা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় প্রবেশ করতে পারেন।
যৌথভাবে সূচকের তৃতীয় স্থানে আছে জার্মানি ও স্পেন। এই দুই দেশের পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের ১৯০টি দেশে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন।
যৌথভাবে ফিনল্যান্ড, ইতালি ও লুক্সেমবার্গ ৪র্থ স্থানে এবং অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেন পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
৬ষ্ঠ স্থানে আছে যৌথভাবে ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল ও যুক্তরাজ্য। এই চার দেশের নাগরিকরা বিশ্বের ১৮৭টি দেশে ভিসা ছাড়া অথবা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করতে পারেন।
সূচকে যুক্তরাষ্ট্র, বেলজিয়াম, চেকপ্রজাতন্ত্র, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড যৌথভাবে সপ্তম স্থানে আছে। এসব দেশের পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের ১৮৬টি দেশে ভিসা ছাড়া অথবা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় প্রবেশ করতে পারেন।
সূচকের একেবারে তলানিতে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান। তারা আছে ১০৯তম স্থানে। এছাড়া ইরাক ১০৮তম, সিরিয়া ১০৭তম, পাকিস্তান ১০৬তম ও ইয়েমেন ১০৫তম স্থানে রয়েছে।
পাসপোর্ট দিয়ে কত দেশে ভিসা ছাড়া বা অন অ্যারাইভাল ভিসায় প্রবেশ করা যায়, ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অথরিটির তথ্যের ভিত্তিতে শক্তিশালী পাসপোর্টের এই সূচক তৈরি করে দ্য হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স। বিশ্বের ১৯৯টি দেশের পাসপোর্ট সূচকে কিছু কিছু দেশ যৌথ অবস্থান পাওয়ায় হ্যানলি মোট ১০৯টি অবস্থান নির্ধারণ করেছে।
গেলো ১৮ বছর ধরে বিশ্বের কোন দেশের পাসপোর্ট কতটা শক্তিশালী তা নিয়ে র্যাংকিং প্রকাশ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতি তিন মাস অন্তর এই সূচক প্রকাশ করা হয়।