আর্কাইভ থেকে ফুটবল

বেলজিয়ামের কাছে হেরে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের বিদায়

এই ম্যাচ দিয়ে সম্ভবত নিজের ইউরো ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টানলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সত্যিই যদি এটা সমাপ্তি, তাহলে বলতে হবে শেষটা হলো হতাশায়।ইউরোর শেষ ষোলোর লড়াইয়ে বেলজিয়ামের কাছে ১-০ তে হেরে বিদায় নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। থরগ্যান হ্যাজার্ডের জয়সূচক গোলে বিদায় ঘণ্টা বেজে গেল রোনালদোদের।
 
সেভিয়ার লা কার্তুহর এই ম্যাচ নিয়ে আগে থেকেই বাড়তি উত্তেজনা ফুটবল পাড়ায়। শেষ ষোলোর লড়াইয়ে এটাই সবথেকে বড় ম্যাচ। ২০১৮ সাল থেকে রেংকিং এর শীর্ষ দল বেলজিয়াম বনাম বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। অবশ্য গ্রুপ পর্ব থেকে দুই দলের পাড়ি দেয়া পথটা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তিনে তিন জয় নিয়ে নকআউটে আসা বেলজিয়ামের বিপরীতে গ্রুপ অফ ডেথ খ্যাত গ্রুপ এফ এর তিন নম্বরে শেষ করা পর্তুগাল।

এর আগে এই দুই দল মুখোমুখি হয়েছে বহু বার। তবে মেজর কোন টুর্নামেন্টে এটাই ছিল প্রথম দেখা। সেই দেখায় উদ্বোধনী গোলটাও ছিল দৃষ্টিনন্দন। বেলজিয়ান তমা মুনিয়ের পাস ডি-বক্সের বেশ বাইরে পেয়ে একটুখানি আড়াআড়ি এগিয়ে বুলেট গতির শট নেন ইডেন হ্যাজার্ডের সহোদর থরগ্যান হ্যাজার্ড। বল শেষ মুহূর্তে সামান্য বাঁক খেয়ে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেয়। পর্তুগীজদের টানা দ্বিতীয় ইউরো জয়ের স্বপ্নটা সেই শটেই ফিকে হয়ে যায়। যদিও বা প্রথামার্ধে কেবল গোল করাটাই বাকি ছিল রোনালদোদের। আক্রমণ, আধিপত্যে ১ নাম্বার দলের গোলমুখে মুহুর্মু শট নিলেও তা যথেষ্ট ছিলো না। বিক্ষিপ্ত শটের পসরার বিপরীতে থিবো কর্তোয়াকে খুব বেশি পরীক্ষা দিতে হয়নি। প্রথামার্ধে তাই পিছিয়ে থেকেই ড্রেসিং রুমে ফেরে বর্তমান চ্যম্পিয়নরা।
 
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বেলজিয়ান মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা ইনজুরিতে মাঠ ছাড়েন। দলের অন্যতম অস্ত্রকে হারিয়ে পর্তুগীজদের সামনে খুব একটা আক্রমণে যেতে পারেনি রবার্টো মার্টিনেজের শিষ্যরা। তবে ব্রুনো-জোতা-সানচেজদের ভুলভাল শটের কল্যাণে বেশি ভুগতে হয়নি বেলজিয়ামকে। পর্তুগীজ আক্রমণভাগের আল্রমণ গুলো কতটা নখদন্তহীন ছিলো তা প্রমাণে প্রয়োজন পরিসংখ্যান৷ সংখ্যার হিসেবে এই ম্যাচে ২৩ শটের বিপরীতে গোলমুখে শট ছিলো মোটে ৪ টা। যে চারটার মধ্যে দুটোই এসেছে ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে। রুবেন ডিয়াসের বুলেট গতির হেড কর্তোয়া পাঞ্চ করে ফিরিয়ে দেন। 

আর অন্যটা হতে পারতো পর্তুগালের জন্যএই ম্যাচ ঘোরানো এক মুহুর্ত। ম্যাচের ৮৩ তম মিনিটে। রাফায়েল গেররোর ডান পায়ের নেয়া বাকানো শট ফিরে আসে গোলবারে লেগে। এর খানিক আগেই সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন ডিয়েগো জোটা। রোনালদোর বাড়ানো বল ডিবক্সে পেয়েও গোল সোজা শট নিতে ব্যর্থ হন তিনি। 

বাকি সময়টা কেটেছে বেলজিয়ামের অর্ধে পর্তুগীজদের হাই প্রেসারিং ফুটবলে। তবে বল জালের দেখা না পাওয়ায় চ্যাম্পিয়নদের ইউরো ২০২০ এর কোয়ার্টারে আর পৌছাতে পারলো না রোনালদোরা। পর্তুগীজ অধিনায়কের স্বপ্নের মতো ইউরো ক্যাম্পেইনেরও সমাপ্তি। ৪ ম্যাচে ৫ গোল নিয়ে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা এখনো তিনি। এর আগে ইউরোতে সর্বোচ্চ গোলের পাশপাশি আন্তর্জাতিক গোলদাতার তালিকার এক নম্বরে নিজের নাম লিখিয়েছেন। আর খুব ব্যতিক্রম না হলে হয়তো ইউরোতে নিজের শেষ ম্যাচটাও খেলে ফেললেন পাচ বারের ব্যালনজয়ী। 

অন্যদিকে ২০১৬ সালের পর্তুগালের মতো এবারের আসরের ডার্ক হস বেলজিয়াম ১-০ গোলের জয়ে পৌঁছে গেছে কোয়ার্টারে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ আরেক ফেভারিট ইতালি। জার্মানির মিউনিখে আগামী শুক্রবার মাঠে গড়াবে এই হাইভোল্টেজ ম্যাচটি।

এএ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন