চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত ফুলবাড়ীবাসী
চালক না থাকায় অযত্নে পড়ে আছে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স, দুই বছর অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বিরত ফুলবাড়ীবাসী, নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক-যন্ত্রপাতি, ভোগান্তিতে রোগীসহ স্বজনরা !
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চালক না থাকায় টানা দুই বছর থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বিরত ফুলবাড়ীবাসী। অ্যাম্বুলেন্স সেবার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত রোগীসহ স্বজনরা। সেই সাথে পর্যপ্ত জনবলের অভাবে আল্ট্রা সনোগ্রাম, এক্স-রেসহ ই-সি-জি সেবা থেকেও বঞ্চিত। ফলে চরম দূর্ভোগে অসুস্থ-রোগী-স্বজনসহ হাজার হাজার মানুষ। চরম ভোগান্তি সহ্য করে অসুস্থ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধ্য হয়ে উচ্চ মূল্যে মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকারসহ বেসরকারী অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে কুড়িগ্রাম-রংপুর-মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালে ছুঁটছেন রোগী ও স্বজনরা। টানা দুই বছর ৪ দিন অতিবাহিত হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিতে না পাড়ায় উপজেলার হাজারও মানুষ চরম-ভোগান্তিতে পড়েছেন। এ যেন দেখার কেউ নেই।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারী তৎকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সামছুন্নাহারসহ অপর একজন ডাক্তারের সরকারি কোয়াটারে চুরি সংঘটিত হয়। কোয়াটারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চুরির সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ৪ জনকে আটক করে পুলিশ। নির্দেশ দাতা হিসাবে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক একাব্বর আলী (৪৭)কেও আটক করা হয়। পরে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চুরির মামলা দায়ের করে তাদেরকে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। চুরির নির্দেশ দাতা হিসাবে আটক অ্যাম্বুলেন্স চালক একাব্বর আলীকে ১৩/০১/২১ তারিখেই সাময়িক বরখাস্ত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে গ্যারেজে তালাবদ্ধ অবস্থায় পরে আছে অ্যাম্বুলেন্সটি। এভাবে অযত্নে অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে থাকছে। ২০২১ সালের ১১ই এপ্রিল অ্যাম্বুলেন্স চালক একাব্বর আলী কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আসলেও বরখাস্ত থাকা অবস্থায় ওই চালক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালানোর নিয়ম নেই বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সুত্রে আরও জানা গেছে, ই-সি-জি, এক্স-রে মেশিন ভাল থাকলে টেকনিশিয়ান না থাকায় দীর্ঘদিন এ সেবা থেকে বিরত। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটিও দীর্ঘদিন পরে থাকতে থাকতে নষ্ট হয়ে যায়। হেলথ সহকারী ২৫ জনের পদ থাকলেও বর্তমানে আছে ১৫ জন। অপর দিকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে চিকিৎকের পদ ২১ জন থাকলেও মাত্র ৮ জন চিকিৎসক দিয়ে কচ্ছপ গতিতে চলছে চিকিৎসা সেবা। তবে অটিরুম অচল আছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুমন কান্তী সাহা জানান, ইতোমধ্যে অ্যাম্বুলেন্স চালক, একজন শিশু বিশেষজ্ঞসহ চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে স্থানীয় প্রশাসন, এমপি মহাদয়সহ উদ্ধোর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশাকরি খুব দ্রুত সময়ে সকল সমস্যার সমাধান আসবে।