নিজেদের টাকা দিয়ে স্কুলে বিদ্যুৎ আনলেন শিক্ষকরা
বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াই ১৩ বছর চলেছে স্কুলটি। অবশেষে এ বছর শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে উঠল সেখানে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ এইট্টিনের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলে বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ নানা সমস্যায় পড়ে কর্তৃপক্ষ। তাই সরকারের কাছে বিদ্যুৎ চেয়ে বারবার আবেদন করে। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। তাই অবশেষে প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল, শিক্ষকরা নিজেরাই তাদের বেতনের টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ আনলেন স্কুলে।
২০১০ সাল থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াই চলছে উত্তরপ্রদেশের এই স্কুলটি। ১৩ বছরে বহুবার সরকারের কাছে স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে স্কুলের পক্ষ থেকে। অবশেষে শনিবার বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে উঠল স্কুলে। শীতকালের চেয়ে অনেক বেশি কষ্টদায়ক গরমকাল। স্কুলজুড়ে থাকা ১২টি ঘরে ফ্যানের বাতাস ছাড়া হাঁসফাঁস করে ওঠে শিক্ষার্থীরা।
তাই শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধানে তাই এগিয়ে এলেন স্কুলের শিক্ষকরাই। প্রিন্সিপাল ড. রবিসহ প্রত্যেক শিক্ষক নিজেদের বেতন থেকে ২৫ হাজার টাকা করে দান করেছেন। সব মিলিয়ে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা উঠে আসে। তারপর সেই টাকা দিয়েই কেনা হয় বৈদ্যুতিক তার এবং ট্রান্সফরমার।
প্রিন্সিপাল বলেন, ২০১০ সালে যখন প্রথমবার এই স্কুলে যোগ দিয়েছিলাম তখন কোনো ইলেকট্রিসিটি কানেকশন ছিল না। এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা সবার কাছে আবেদন করেছি। কমপক্ষে ২০টিরও বেশি চিঠি লিখেছি জনপ্রতিনিধিদের কাছে, কিন্তু সবই পণ্ডশ্রম। ২০১০ সাল থেকেই এই বিদ্যালয় উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নীত হলেও বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি।
চাঁদা তুলে জোগাড় করা ৮০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিভাগকে দেয়া হয়েছে কানেকশন এবং ট্রান্সফরমারের জন্য। বাকি টাকা লাগানো হয়েছে ২০০ মিটার লম্বা কেবল তার এবং স্কুলের ঘরগুলোকে ওয়ারিং করার সরঞ্জাম কেনার জন্য।
প্রিন্সিপাল আরও জানান, গেলো ২৫ জানুয়ারি ট্রান্সফরমার বসানো হলেও তার কাজ শুরু হলো এই শনিবার (২৮ জানুয়ারি) থেকে। এখন এই বিদ্যালয়ে মোট ২৫৩ জন শিক্ষার্থী আছে।