আর্কাইভ থেকে এশিয়া

সব বিদেশি সেনাকে সরিয়ে নিতে তালেবানের আল্টিমেটাম

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটো বাহিনীর সব সদস্যের। নির্ধারিত এই সময়ে সব বিদেশি সেনা আফগানিস্তান ছেড়ে না গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। তবে, সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও সম্প্রতি আফগানিস্তানে কিছু সেনা থেকে যাবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ঘোষিত সময়সীমার পর আফগানিস্তানে কোনো বিদেশি সেনা অবস্থান করলে, তাদের দখলদারের তকমা ও ঝুঁকি মাথায় নিয়ে থাকতে হবে। তালেবানের কাতার অফিস থেকে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সশস্ত্র গোষ্ঠিটির মুখপাত্র সুহাইল সাহিন।

তালেবান জানায়, ন্যাটোর পূর্বঘোষিত সেপ্টেম্বরে সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমার আগেই সব বিদেশি বাহিনীকে আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে হবে।

অথচ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, কূটনৈতিক স্থাপনা ও কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় আফগানিস্তানে এক হাজার মার্কিন সেনা থেকে যাবে। অবশ্য এর আগে চলতি বছর ১১ সেপ্টেম্বরের আগে সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় ন্যাটো এবং যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের দুই দশকের আফগান মিশন শেষের দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু, দেশটিতে সংঘাত বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই। সরকারি বাহিনী যখন একাই নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন একের পর এক অঞ্চলের দখল নিচ্ছে তালেবান। আগামী দিনে কাবুলের পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তা নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন পশ্চিমা নেতারা।

তবে সশস্ত্র গোষ্ঠীর মুখপাত্র সুহাইল সাহিন জানান, সামরিক পথে কাবুল দখলের নীতি তালেবানের পরিকল্পনায় নেই। তিনি বলেন, সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমার পর সামরিক ঠিকাদারসহ কোনো বিদেশি বাহিনী আফগানিস্তানে থাকা চলবে না। সমঝোতার বিরুদ্ধে গিয়ে কাউকে রেখে দেওয়া হলে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আমাদের নেতারা। কূটনীতিক, বেসরকারি সংস্থা বা বিদেশি নাগরিকরা তালেবানের হামলার লক্ষ্যবস্তু হবে না। তাই বর্তমানে তাদের নিরাপত্তায় যারা নিয়োজিত তাদের থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। সব বিদেশি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে কূটনীতিক বা বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। বরং এগুলো আমাদের জনগণের জন্য প্রয়োজন আছে।

বাগরাম সামরিক বিমান ঘাঁটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত আখ্যা দিয়ে তালেবান মূখপাত্র বলেন, তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর সমঝোতা চুক্তিতে, তালেবান-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আল-কায়েদা বা কোনো কট্টরপন্থি গোষ্ঠীকে অবস্থান করতে না দেওয়ার বিনিময়ে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।

আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক হামলাগুলোতে তালেবানের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাহিন। তার মতে, সম্প্রতি অনেকগুলো জেলায় লড়াই নাকচ করে তালেবানের সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে আফগান সেনারা।

বর্তমান আফগান সরকারকে মৃত্যুপথযাত্রী আখ্যা দিয়ে আফগানিস্তানকে ইসলামী আমিরাত ঘোষণার ইঙ্গিত দেন তালেবান মুখপাত্র। আফগান সরকারের নির্বাচনের দাবিকে তারা আমলে নেবে না বলে মনে হচ্ছে।

সাহিন বলেন, তালেবানের সঙ্গে আফগান সরকারের আলোচনায় নির্বাচনের বিষয়ে দাবি ওঠেনি।

এদিকে, ৯/১১ হামলার ২০ বছর পূর্তির আগেই অর্থাৎ আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এখনও দুই মাস বাকি থাকলেও কয়েকদিনের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন