আর্কাইভ থেকে দুর্ঘটনা

নারায়ণগঞ্জে আগুনে দগ্ধ ৫২ মরদেহ উদ্ধার, তালাবদ্ধ থাকায় এতো মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির সেজান জুস কারখানায় আগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৫২টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। চতুর্থ তলায় তালাবদ্ধ থাকায় শ্রমিকরা বের হতে পারেনি। ফ্লোর তালাবদ্ধ না থাকলে এতো প্রাণহানি হতো না। জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা দেবাশিষ বর্ণম আজ শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, কারখানার চতুর্থ তলা পর্যন্ত তল্লাশি করে আজ ৪৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ভবনের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় তল্লাশি শুরু করেছেন। পরে জানা যাবে আরও কোনও মরদেহ আছে কি না।

তিনি বলেন, চতুর্থ তলায় তালাবদ্ধ থাকায় শ্রমিকরা বের হতে পারেনি। ফ্লোর তালাবদ্ধ না থাকলে এতো প্রাণহানি হতো না। লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

বৃহস্পতিবার ( ৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে ভুলতা কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সেজান জুস কারখানায় আগুন লাগে। রাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তিন শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেন।

আগুনের খবর পেয়ে কাঞ্চন, পূর্বাচল, ডেমরা, আড়াইহাজার, আদমজী ফায়ার সার্ভিসের ১১ ইউনিটের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ কাজে যোগ দেন। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও ডেমরা ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ শুরু করে।

শুক্রবার ভোরের দিকে আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। কিন্তু সকালে ভেতরে আবার আগুন বেড়ে যায়। সকাল সোয়া ১০টার দিকেও ছয় তলা কারখানা ভবনের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার সামনের দিকে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

আগুনে কারখানার কাঁচামাল, উৎপাদিত পণ্য, মূল্যবান সামগ্রীসহ বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কেউ কেউ লাফিয়ে পড়ে আহত হন।

ভবনের চতুর্থ তলায় ললিপপ, তরল চকলেট, তৃতীয় তলায় অরগানিক পানীয় (জুস, লাচ্ছি), দোতলায় টোস্ট বিস্কুট, বিভিন্ন ধরনের পানীয় এবং নিচতলায় বাক্স ও পলিথিন তৈরির কারখানা ছিল। পঞ্চমতলার একপাশে সেমাই, সেমাই ভাজার তেল, পলিথিন; অপর পাশে কারখানার গুদাম ছিল। কারখানার ষষ্ঠতলায় ছিল কার্টনের গুদাম। টানা ১৮ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় ভবনটিতে ফাটলও দেখা দেয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন