মেয়ের বিয়ের রাতে আগুনে পুড়ে মা-মাসি-দাদুসহ ১৪ জনের মৃত্যু
জোরকদমে মেয়ের বিয়ের তোড়জোড় চলছিল মঙ্গলবার রাতে। সেই রাতেই ঝলসে মৃত্যু হল মা, মাসি, দাদু, ঠাকুমা-সহ ১৪ জনের। মঙ্গলবার রাতে আগুন লাগে ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের একটি প্রশাসনিক এলাকা ধানবাদের শক্তিমন্দির এলাকার একটি বহুতলে। সেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় একই পরিবারের ১৪ জনের। ঘটনায় শোকে পাথর গোটা পরিবার।
ধানবাদের শক্তিমন্দির এলাকায় একটি বহুতলের বাসিন্দা সুবোধলাল শ্রীবাস্তব। সোমবার তাঁর মেয়ে স্বাতীর সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল গিরিডির বাসিন্দা রাজেন্দ্রলাল শ্রীবাস্তবের ছেলে সৌরভের। মঙ্গলবার রাতে লজে বসেছিল বিয়ের আসর। অন্য দিকে শক্তিমন্দির এলাকায় সুবোধলালের ফ্ল্যাটেও বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সাজগোজ করছিলেন মহিলারা।
স্বাতীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময় আগুন লাগে ওই আবাসনের দ্বিতীয় তলার বাসিন্দা পঙ্কর আগরওয়ালের ফ্ল্যাটে। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আবাসনের তৃতীয় তলায় সুবোধের ফ্ল্যাটেও। সেই ফ্ল্যাটে সেই সময় ছিলেন স্বাতীর মা, মাসি, দাদু, ঠাকুমা-সহ ১৪ জন। আগুন লাগার খবর পেয়ে তাঁরা সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়েছিলেন বলে স্বাতীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু সিঁড়িতে আগুন এবং ধোঁয়া দেখে তাঁরা থমকে যান। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই আগুনে ঝলসে যান তাঁরা। দেহ এমন ভাবে ঝলসে গিয়েছে যে চেনা দুষ্কর। সব মিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০ মহিলা, ৩ শিশু এবং এক বৃদ্ধের। স্বাতীর বিয়েতে বোকারো, কোডারমা, হাজারিবাগ থেকে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের আত্মীয়রা। অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে সেই আত্মীয়দের অনেকের।
এই মর্মান্তিক ঘটনার রাতেও লজে সম্পন্ন হয়েছে স্বাতী এবং সৌরভের বিয়ে। এখনও স্বাতীর কানে পৌঁছয়নি এই দুঃসংবাদ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি জানেন, মা মালা শ্রীবাস্তব আগুনে জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। শ্বশুরবাড়ির এই বিপত্তির খবর এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানেন না সৌরভও। মঙ্গলবারের অগ্নিকাণ্ডে জখম হয়ে এখনও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি কয়েক জন।
গত কয়েক দিনের মধ্যে ধানবাদে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। দিন কয়েক আগে ওই এলাকাতেই একটি নার্সিংহোমে আগুন লাগে। ওই অগ্নিকাণ্ডে ৬ জনের মৃত্যু হয়। পর পর এমন ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দমকল বাহিনীর পরিকাঠামো নিয়ে।