আর্কাইভ থেকে আন্তর্জাতিক

কেয়ামতের আলামত না তো...

অধিকাংশ মানুষই যখন ঘুমিয়ে পড়েছেন। হয়তো দুই একজন ব্যস্ততা শেষে ঘুমাতে যাবেন। কেউ হয়তো ঘুম থেকে উঠে পড়েছেন নতুন দিন শুরু করবে বলে। সবার পরিকল্পনায় রাত পোহালেই সুন্দর একটা দিনের শুরু। কিন্তু হঠাৎ করেই এক নিমিষেই সব যেন শেষ। চোখের পলকে নিজ শরীরের ওপর ভেঙে পড়ল ভবনগুলো।

এরপর মৃত্যুর মিছিল যেন আর থামছে না। সাজানো–গোছানো এলাকাটি ইট, পাথর, রড আর ধুলাবালুতে একাকার হয়ে গেল। চারপাশে মানুষের আর্তনাদ–আহাজারি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে যেন ‘কেয়ামত শুরু হয়েছে’।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, তুরস্ক–সিরিয়া সীমান্ত অঞ্চলে ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, ঘড়িতে তখন সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিট, সবাই ঘুমিয়ে। মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এর পর থেকে ছোট ছোট কম্পন অনুভূত হচ্ছিল।

তবে ১২ ঘণ্টা পেরোতে না পোরোতেই ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প হয়। প্রথম ভূমিকম্প এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তা টের পাওয়া গেছে ইসরায়েল, সাইপ্রাস এমনকি সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার দূরের গ্রিনল্যান্ডেও।

ভূমিকম্পে মানুষের অসহায় অবস্থা উঠে এসেছে তুরস্কের একাধিক ভিডিওতে। সেটি কোন এলাকার, তা জানা যায়নি। টুইটারে প্রকাশিত ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পের পর আতঙ্কে রাস্তা দিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছেন মানুষ। তাদের মধ্যে এক নারী বুকের মধ্যে এক শিশুকে আঁকড়ে ধরে রয়েছেন। হঠাৎ রাস্তার পাশের একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ে। ধোঁয়া ও ধুলায় ঢেকে যায় পুরো এলাকা।

বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওগুলো দেখলেই বোঝা যায়, এই ভূমিকম্প তুরস্ক ও সিরিয়ায় কতটা ক্ষত সৃষ্টি করেছে। দেখা গেছে, উপদ্রুত এলাকাগুলোর সড়কের দুই পাশের ভবনগুলো একেবারে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

মনেই হবে না কিছু সময় আগেই সবকিছু সাজানো–গোছানো ছিল। ধসে পড়া ভবনগুলোতে মানুষের আনাগোনা। তাদের কেউ কেউ উদ্ধারকারী, কেউ আবার হতাহতদের স্বজন।

উদ্ধারকারীরা একের পর এক মরদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে আনছেন। উদ্ধার হওয়া অনেকের শরীরে রয়েছে প্রাণের অস্তিত্ব। তাদের হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।

আর অন্যরা অপেক্ষা করছেন ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া স্বজনদের জন্য। তাদের আশা, হয়তো বেঁচে আছেন পরিবারের মানুষগুলো। তবে শেষ পর্যন্ত আশা ভঙ্গ হচ্ছে অনেকের। পরিবারের সদস্যের মরদেহ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে অনেককে।

সর্বশেষ পরিস্থিতি: শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৩ হাজার ৮০০–এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেক মানুষ। অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। এসব মানুষের বেশির ভাগই ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে উদ্ধারকর্মীদের অভিযান চলছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন