গ্যাস লাইটার নিয়ে খেলতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে গ্যাস লাইটার নিয়ে খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গিয়ে ৭ বছরের শিশু সাদিয়ার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ওই শিশু কাঠমিস্ত্রি সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে।
গেলো বুধাবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় ঘটনাটি ঘটেছে।
প্রতিবেশি ফিরোজ আলম জানায়, প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় সাদ্দামের বাড়ীতে গ্রামের অন্যান্য মহিলাদের সাথে তার স্ত্রী ৪ বছরের শিশু ফিয়ামাকে সঙ্গে নিয়ে হুজুরের কাছে আরবী শিক্ষা নিতে যায়। ফিয়ামা ও সাদ্দামের মেয়ে সাদিয়া প্রায় ৩ বছরের ছোট-বড় হলেও তারা একে অপরের খেলার সাথী। এদিনও তারা এ সময়ে একসঙ্গে খেলছিল। একসময় খেলতে খেলতে রান্নাঘর ঢুকে চুলার কাছে একটি গ্যাস লাইটার পেয়ে যায় তারা। ঘরের পিছনে কিছু পরিত্যাক্ত পলিথিন একত্রিত করে এতে সেই লাইটারে আগুন জ্বালাতে গিয়ে পলিথিন থেকে তা লাগে শিশু সাদিয়ার জামায়। নিজে প্রাণপন চেষ্টা করেও আগুন নেভাতে ব্যার্থ হয় সে। চিৎকার চেচামেচী করে আতঙ্কে এদিক- সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। মহুর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে তার সম্পুর্ন শরীরে। দাউ দাউ জ¦লতে থাকে আগুন। এটি দেখে অবুঝ ফিয়ামা দৌড়ে গিয়ে জানায় সাদিয়ার মা জান্নাতী বেগমকে। সকলেই দৌড়ে আসে। নিজের পরনের কাপড় খুলে তা দিয়ে মেয়ের শরীরে জড়িয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে মা। এ সময় একজন এক বালতি পানি ঢেলে দেয়। এতে আগুন নিভে গেলেও গায়ের চামড়া ছিলে যায়। গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে অসহ্য যন্ত্রনায় কাতরাতে থাকে শিশুটি।
সাদিয়ার বাবা সাদ্দাম জানায়, ঘটনা শুনে দ্রুত বাড়ী ফিরে মেয়েকে এ অবস্থায় দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। কোনমতে নিজেকে সামলে তাকে নিয়ে যান নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ডাক্তাররা সেখান থেকে তাকে পাঠায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও অবস্থার অবনতি ঘটলে দ্রুত তাকে পাঠানো হয় ঢাকায়। রাতেই শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে ভর্তির উদ্দেশ্যে ঢাকা যাওয়ার পথে সে মারা যায়।
তিনি জানান,এর চেয়ে যদি আমার মৃত্যু হতো তাও ভাল ছিল। এ কষ্ট নিয়ে আমি কিভাবে বাঁচব।