গণমাধ্যমে তথ্য না দিতে স্থায়ী কমিটির কাছে একাধিক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ
গণমাধ্যমে তথ্য না দিতে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, কোনো সংবাদ গণমাধ্যমে চলে আসলে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি পড়তে হয়। এতে সুনামের চেয়ে বদনামই বেশি হয়।
মন্ত্রীদের এমন অলিখিত অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও অর্থ-পরিকল্পনা, বাণিজ্য, শিল্প কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের তদারকি, সুপারিশ ও সুপারভিশনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ভিত্তিক এসব সংসদীয় স্থায়ী কমিটি নিয়মিত সভা করে মন্ত্রণালয়ের কাজকর্ম যেমন পর্যালোচনা করেন, তেমনি নানারকম পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনাও দিয়ে থাকেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী সদস্য থাকেন। বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরাও স্থায়ী কমিটির সদস্য থাকেন।
স্থায়ী কমিটির সেসব সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকেন। মন্ত্রণালয়ের বিস্তারিত বিষয়াদি তুলে ধরেন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা। এসব সভাগুলো জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির নির্ধারিত কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সর্বশেষ ৩০ জানুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় সংসদ ভবনের নির্ধারিত কক্ষে। সেখানে সভাপতিত্ব করেন সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্য জানান, ওই বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন অভিযোগ উত্থাপন করেন স্থায়ী কমিটি নিয়ে।
সূত্রমতে মন্ত্রী বলেন, এখানে বৈঠকে আলোচনার স্বার্থে মন্ত্রণালয় থেকে সংসদীয় কমিটির কাছে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। এসব তথ্য-উপাত্ত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সেটি বাইরে/গণমাধ্যমে চলে আসে।
মন্ত্রী বলেন, পরে সেগুলো বিভিন্নজনের হাতে যায়। সাংবাদিকেরা এখান থেকে তথ্য-উপাত্ত পেয়ে সংবাদ পরিবেশন করে। যাতে মন্ত্রণালয় প্রশ্নের সম্মুখীন হয়।
এই জায়গা থেকে মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কাগজপত্র সাংবাদিকদের না দেয়ার অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সামনের পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে স্থায়ী কমিটির কাছে আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ করে গণমাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত দেয়ার ব্যাপারে আরও সতর্ক হতে চেষ্টা করা হচ্ছে। সামনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে অনাহূত বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করতে চায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়।
গেলো ৩০ জানুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক সাংবাদিকদের কাগজপত্র না দেয়ার বিষয়ে স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করলেও প্রকাশ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বিধি-নিষেধের কথা স্বীকার করছেন না।