ইনস্টাগ্রামে তার অনুরাগীর সংখ্যা এক লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। নামী ফ্যাশন পত্রিকার জন্য ফোটোশুট করে সেই ছবি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টও করেছিলেন। কিন্তু প্রায় এক সপ্তাহ থেকে নিখোঁজ রয়েছেন মানুষটি।
এরপর আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে মেনল্যান্ড চায়না থেকে ১৫ মিনিটের দূরত্বে তাকু লিং এলাকার একটি বাড়িতে তল্লাশি চালায় হংকং পুলিশ। বাড়ির ভিতরে স্যুপ তৈরির বড় পাত্রে রাখা ছিল তার মাথার খুলি। নিহত ব্যক্তিটি হলেন হংকংয়ের মডেল অ্যাবি চোই (২৮)।
অ্যাবিকে খুনের অভিযোগে তার প্রাক্তন স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং ভাসুরকে গ্রেপ্তার করে হংকংয়ের পুলিশ। পুলিশ সুপার অ্যালান চ্যাং জানান, খুলির ভিতরের মাংস সব বের করে নেয়া হয়েছে। স্যুপের পাত্রে রেখে তা সেদ্ধ করা হয়েছিল বলেই ধারণা তার। খুলির পিছনে একটি ছোট গর্তও লক্ষ করেছেন অ্যালান।
পুলিশ সূত্রে খবর, ১৯ ফেব্রুয়ারি নিজের ইনস্টাগ্রাম থেকে শেষ পোস্ট করেছিলেন অ্যাবি। তার পর থেকে তাকে আর নেটমাধ্যমে সক্রিয় দেখা যায়নি। ২১ ফেব্রুয়ারি হংকং থানায় অ্যাবির পরিবারের সদস্যেরা নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত শুরু করার পর সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) অ্যাবির গ্রামের বাড়ি থেকে হাড়গোড়ের টুকরো খুঁজে পায় পুলিশ। ফ্রিজের ভিতরে হাড় লুকোনো ছিল বলে দাবি পুলিশের।
হংকং’র স্থানীয় সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে জানা যায়, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছে, এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ওই বাড়ির ভিতর থেকে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যান। ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ব্যাগের ভিতর থেকে মানুষের শরীরের হাড়ের টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। সেখান থেকে মাংসের কাটার যন্ত্রও পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, অ্যালেক্স কং নামের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছিলেন অ্যাবি। তার দুই সন্তানও রয়েছে। কিন্তু টাকাপয়সা নিয়ে তাদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। অ্যালেক্সের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় অ্যাবির। তারপর হংকংয়ের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের পুত্র ক্রিস ট্যামকে বিয়ে করেন অ্যাবি। অ্যাবি এবং ক্রিসের দুই সন্তান রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, খুনের পর অ্যাবির প্রাক্তন স্বামীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর টাকা এবং বহুমূল্য ঘড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। অ্যাবিকে খুন করার পর শহর থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। নৌকায় চেপে পালাতে যাওয়ার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার ফলে অ্যাবির প্রাক্তন শ্বশুর, শাশুড়ি এবং ভাসুরকেও গ্রেপ্তার করেছে হংকং পুলিশ।
সূত্র: এনডিটিভি