গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে মেট্রন ফাতেমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার (৩ জুলাই) কারা অধিদপ্তর বরাবর এ সুপারিশ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মো.ওবায়দুর রহমান।
তিনি জানান, মেট্রন ফাতেমার বিরুদ্ধে হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে জেলার ফারহানা আক্তারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে মেট্রন ফাতেমাকে প্রাথমিকভাবে গত (২০ জুন) শোকজ করা হয়। মেট্রন ফাতেমা (২৮ জুন) শোকজের জবাব দিলে সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে (১ জুলাই) থেকে রিজার্ভে ডিউটি দেয়া হয়। সে আর কারাগারের ভিতরে কোনো কাজ করতে পারবে না বলে জানান তিনি।
এর আগে গেলো (৩ জুলাই) একই অভিযোগে অভিযুক্ত ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়াকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
মেট্রন ফাতেমা এবং পাপিয়া মিলে রুনা লায়লা নামে হাজতিকে সম্প্রতি নির্যাতন করেন। তার কাছ থেকে টাকা পয়সা লুট করে নেয়। এমন অভিযোগে রুনার ছোট ভাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। পরে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে গত ৩ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে একটি প্রিজনভ্যানে করে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানে হয় পাপিয়াকে। একই সঙ্গে মেট্রন ফাতেমার বিরুদ্ধে কারা অধিদপ্তর বরাবর বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করা হয়।
উল্লেখ্য, নথি চুরির একটি মামলায় শিক্ষানবিস আইনজীবী রুনা লায়লাকে ১৬ জুন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আনা হয়। কারাগারের সাধারণ ওয়ার্ডে নেয়ার পর রুনার দেহ তল্লাশি করে কর্তব্যরত মেট্রন তার কাছে ৭ হাজার ৪০০ টাকা পান। ওই টাকা ছিনিয়ে নেয়ার জন্য পাপিয়া ও তার সহযোগী কয়েদিরা গত ১৯ জুন রুনার ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করেন বলে অভিযোগ তার পরিবারের। এক পর্যায়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রুনাকে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। এ নিয়ে কারাগারের ভেতরে কেস টেবিল বা সালিশ বৈঠকখানা বসে। সেখানে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বন্দি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তবে পাপিয়া এবং মেট্রন ফাতেমার ভয়ে সাধারণ কয়েদিরা রুনা লায়লার ওপর অমানসিক নির্যাতনের প্রতিবাদও করতে পারেনি।