কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর-গোরকমন্ডপ এলাকায় ধরলার তীব্র স্রোতে ব্রীজ ভেঙে যাওয়ায় আবাসন বাসীসহ হাজারও মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ ব্রীজটি নির্মাণে পরিকল্পনার ঘার্তি ছিল এবং নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।
জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন সহায়তার বরাদ্দে ৪ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা ব্যয়ে চর-গোরকমন্ডপ এলাকায় ১০ ফিট দৈর্ঘ্যের ব্রীজটি হস্তান্তরের ১৫ দিনের মধ্যে ধরলার তীব্র স্রোতে ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। নির্মানের ১৫ দিনের মাথায় ধরলার তীব্র স্রোতে ব্রীজটি ভেঙ্গে পানির নিচে পরে থাকায় নিম্ন মানের কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
চর-গোরকমন্ডপ এলাকার নেছার আলী, এমদাদুল হক ও শফিকুল ইসলাম জানান, আমরা বার বার বলছি এখানে বড় ব্রীজ দেন। কিন্তু যারা কাজ করেছে তারা আমাদের কথা শোনেনি। মাত্র ১০ ফিট দৈর্ঘ্যের একটি ব্রীজ করেছে। ব্রীজের কাজের মানও ভাল হয়নি। সেই সাথে ব্রীজের দুই পাশের সড়কের মাটি ভরাটের কাজ ভালভাবে না করায় ধরলার স্রোতে ব্রীজটি ভেঙে গেছে। আমরা মাত্র ১৫ দিন ব্রীজ দিয়ে চলাচল করেছি । ব্রীজ ভেঙে যাওয়ায় আমাদের চলাচলের বড়ই কষ্ট হয়েছে। একই এলাকার আব্দুস ছালাম ও শফিকুল মিয়া একই কথা জানিয়ে বলেন, বলার ভাষা নেই। কিভাবে একটি নতুন ব্রীজ সামান্য পানির স্রোতে ভেঙে যায়। অবশ্যই নিম্ন মানের কাজ হয়েছে জানান তারা।
চরগোরকমন্ডপ আবাসনের বাসিন্দা তোফাজ্জাল হোসেন জানান, ব্রীজ ভেঙে যাওয়ায় আবাসনবাসীসহ হাজার হাজার মানুষ টানা ১২ দিন থেকে দুর্ভোগে আছি। ব্রীজটি ভেঙে প্রায় ৪০ ফিট সড়ক ভেঙে বড় গর্তে পরিনিত যাওয়ায় আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজ যেতে পারছে না। আমরাও ভাঙার কারণে আনন্দবাজার, বিডিআর বাজার, বালারহাটসহ ফুলবাড়ী সদরের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা এবারেই বিছিন্ন।
ওই এলাকার ভ্যান চালক শাহার আলী জানান,নতুন ব্রীজটি ভেঙে যাওয়ায় ভ্যান নিয়ে ক্ষ্যাপ পারতে পারছি না। টানা ১২ দিনদিন ধরে পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে আছি বাহে। জানি না আবার কত বছর পর ব্রীজ হবে বাহে।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: হাছেন আলী জানান, ওই ব্রীজের কাজটি খুবই ভাল হয়েছে। তিনি আরও জানান ব্রীজটির কাজ ভাল হওয়ায় উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী বিপুল মিয়া পরিদর্শন করে চুড়ান্ত বিলের সুপারিশ করায় আমি বিল উত্তোলন করেছি। তবে ধরলার তীব্র স্রোসের কারণে ব্রীজটি ভেঙে যায় এবং বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে জানানো হয়েছে। আশা করছি সেখানে ত্রানের বরাদ্দে একটি বড় ব্রীজ নির্মান করা হবে বলে আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী বিপুল মিয়া পরিদর্শন জানান, সিডিউল অনুযায়ী ব্রীজটির কাজ সম্পুর্ন হওয়ায় চুড়ান্ত বিলের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আকস্মিক বন্যার পানির তোড়ে ব্রীজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা প্রাকৃতিক দূর্যোগ বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন দাস জানান, এব্যাপার দ্রুত খোজ খবর নেয়া হচ্ছে। নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে ব্রীজটি নির্মাণ করার সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি মোকাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে