ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে সদ্য ভর্তি হওয়া এক নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ তুলেছেন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বাবা। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বরাবর তিনি ই-মেইলের মাধ্যমে এই অভিযোগ করেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত সপ্তাহে তার ছেলে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছে। তার ছেলে সহ আরও ৭/৮ জন ছাত্র অন্য কয়েকজন ছাত্র দ্বারা র্যাগিংয়ের শিকার হয়। তারা নবীন শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা শেখানোর জন্য ডেকে নিয়ে ক্রিকেট মাঠে পানি বহন করানো, বাবা-মাকে নিয়ে গালিগালাজ, মোবাইল ফোন তল্লাশি সহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন। এতে তার ছেলে ভয় পেয়ে রাতে ঘুমাতে পারেনি। এখন তিনি তার ছেলেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবেন কিনা এ বিষয়ে রেজিস্ট্রারব্র কাছে সাহায্য কামনা করেন।
অভিযোগকারী অভিভাবক শাখাওয়াত বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমার ছেলের সাথে ঘটায় আমি হতবাক হয়েছি। ঘটনার পর থেকে আমারা আতঙ্কিত। ছেলের নিরাপত্তার কথা ভেবে এখনই তার পরিচয় বা অভিযুক্তদের সম্পর্কে কিছু বলতে চাচ্ছি না। দুয়েকদিনের মধ্যে আমি ক্যাম্পাসে এসে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।
ই-মেইল প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, শওকত নামের এক ব্যক্তি শিক্ষার্থীর বাবার পরিচয়ে মেইল করেছেন। মেইলে তিনি তার ছেলেকে র্যাগ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। পরে আমি বিষয়টি দেখার জন্য প্রক্টর অফিসে পাঠিয়েছি।
অ্যান্টি র্যাগিং ভিজিল্যান্স কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ই-মেইলে সুস্পষ্টভাবে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। আমরা মেইলে দেওয়া নাম্বারে যোগাযোগ করে পুরোপুরি তথ্য দিতে বলেছি৷ আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। সংশ্লিষ্ট বিভাগে এ ধরনের কোনো অভিযোগ করা হয়েছে কিনা খোঁজ নিচ্ছি। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে এবিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শিমুল রায়, আমরা নবীন বরণের দিনই সবাইকে র্যাগিংয়ের বিষয়ে সচেতন করেছি। এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে র্যাগিংয়ের ঘটনায় ২১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রীকে স্থায়ী বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এদিকে গত ২ সেপ্টেম্বর ইবির ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়। ক্লাস শুরুর আগেই র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে শক্ত অবস্থানে আছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ছাত্রত্ব বাতিল হতে পারে বলেও জানায় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে ক্যাম্পাস সহ কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ রয়েছে।