গ্যাস সংকটে যমুনা সার কারখানায় উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়ায় মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কারখানায় ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। সার কারখানার একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে সার উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে যমুনা সার কারখানায় গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
ফলে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল) ইউরিয়া উৎপাদন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে।
ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানির উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার স্বার্থে যমুনা সার কারখানার গ্যাস সরবরাহ কমানো হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জেএফসিএল সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন কেপিআই-১ মানসম্পন্ন যমুনা সার কারখানা প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দৈনিক এক হাজার ৭০০ টন ইউরিয়া উৎপাদন করে আসছে৷
বর্তমান সময়ে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টন পর্যন্ত উৎপাদন হচ্ছিল। তবে প্রতিবছর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখায় সার উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা আড়াইটা থেকে কারখানায় গ্যাস সরবরাহে চাপ হঠাৎ কমে যায়। ফলে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কারখানার ইউরিয়া সার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সম্প্রতি ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে সার উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিআইসি। এজন্য সেখানে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে যমুনা সার কারখানায় গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
জেএফসিএল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এই কারখানায় উৎপাদিত সার বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ উত্তরাঞ্জলের ২০টি জেলার চাহিদা পূরণ করছে। উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা শঙ্কিত। দ্রুত প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে উৎপাদন চালুর দাবি জানান তিনি।
যমুনা সার কারখানার ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪২ থেকে ৪৩ পিএসআই গ্যাসের চাপ প্রয়োজন। এই চাপ ৯ পিএসআইয়ে নেমে এলে উৎপাদন সম্ভব হয় না। গ্যাস স্বল্পতায় সোমবার দুপুর থেকেই উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল। বর্তমানে বিদ্যুৎ ও ইউটিলিটি উৎপাদন চালু থাকলেও সার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, কারখানায়র গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গ্যাস স্বল্পতার কথা জানিয়েছে।
তিনি আরও জানান, পুনরায় কবে উৎপাদন শুরু হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।