জনগণের ভোটের অধিকার যাতে নিশ্চিত হয়, তার ব্যবস্থা করেছি। অস্ত্র হাতে রাতের অন্ধকারে না, ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন হবে। সবসময় আমাদের লক্ষ্য ছিল জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা। বললেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের জেলা কার্যালয়ে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারে আসার পর থেকে একের পর এক নির্বাচন হয়েছে। এখানে নানা ধরনের অনিয়ম দেখেছি। যখনই আমরা সুযোগ পেয়েছি সেগুলো সংশোধন করে জনগণের ভোটের অধিকার যাতে নিশ্চিত হয়, তার ব্যবস্থা করেছি। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি আইন পর্যন্ত করে দিলাম। আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।
তিনি বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’— এই স্লোগান দিয়ে আমরা মানুষকে তাদের ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করি এবং ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করি।
তিনি আরও বলেন, জনগণের যে ক্ষমতা ক্যান্টনমেন্টে বন্দি ছিল, আমরা সেই ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ ও আমাদের যে দলগুলো নিয়ে জোট করি, সে জোটের মাধ্যমে ফিরিয়ে দিয়েছি। প্রথমে পাঁচ বছর ক্ষমতা, তখন ছিলাম দেশের অনেক অগ্রগতি করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেশের স্বার্থ বিক্রি করতে চায়নি বলে ক্ষমতা আসতে পারেনি। ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। তারপর থেকে বাংলাদেশ একটি জঙ্গি, দুর্নীতির দেশ এবং আরও ভয়াবহ পরিস্থিতিতে উপনীত হয়। সেসব প্রতিঘাত পার হয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩টি আসন পায়। সেবার বিএনপি আসন পেয়েছিল মাত্র ৩০টি।
সরকারপ্রধান বলেন, সুপরিকল্পনা নিয়ে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনায় শুরু করি। কারণ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ একমাত্র রাজনৈতিক দল... যারা অর্থনৈতিক নীতিমালা সেটিও আমরা নতুনভাবে গ্রহণ করি যে, আমরা সরকারে গেলে কীভাবে এ দেশের উন্নতি করব। আমাদের উন্নয়নের পরিকল্পনা সবসময় তৃণমূল মানুষদের কথা মাথায় রেখে করা হয়।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় লোক লাভবান হবে— মিলিটারি ডিটেক্টররা ক্ষমতা আসলেই এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করত। তারা কিছু এলিট শ্রেণি তৈরি করে তাদের হাতে ব্যবসা-বাণিজ্য, ধন-সম্পদ তুলে দিয়ে তাদের ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করত। তবে আমাদের লক্ষ্য সেটি ছিল না। আমাদের লক্ষ্য ছিল জনতার ক্ষমতায়ন। গ্রাম পর্যায়ের মানুষ যেন ক্ষমতা পায় সেই ব্যবস্থাটাই করা।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালার বিরাট পরিবর্তন আমরাই নিয়ে আসি। যেটা আমাদের সংবিধানের ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদ... যে সংবিধান জাতির পিতা স্বাধীনতার পর মাত্র নয় মাসের মধ্যে প্রণয়ন করেন এবং পরে দশ মাসের মধ্যে যে সংবিধান কার্যকর হয়। এই সংবিধানের ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা স্পষ্ট ছিল যে, জাতীয়করণ হবে।
তিনি বলেন, এর হলো মানে সরকারি, সমবায় ও বেসরকারি এই তিনটি খাতকে গুরুত্ব দেওয়া। সেটি অনুসরণ করেই আমরা অর্থনৈতিক খাতের নীতিমালা প্রণয়ন করি। আমরা সরকারে আসার পর সেই ঠিক সেভাবে বাস্তবায়ন শুরু করি এবং ব্যাপক হারে বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দেই। আমার লক্ষ্য একটাই ছিল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা... যেন মানুষ কাজ পায় ও করার সুযোগ পায়।