আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

অবশেষে পদত্যাগের সুর বাজলো শ্রীলঙ্কান প্রধানমন্ত্রীর

অবশেষে পদত্যাগের সুর বাজলো শ্রীলঙ্কান প্রধানমন্ত্রীর

সরকারবিরোধী ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা। লাগাতার আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে যাচ্ছে দেশটি প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। মন্ত্রিসভার এক বিশেষ বৈঠকে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের অনুরোধে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

আসছে সোমবার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে একটি বিশেষ বিবৃতিতে তার পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন। 

আজ রোববার (৮ মে) শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম কলম্বো পেজ-এর উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।

প্রায় দেড় মাস ধরে শ্রীরঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছিলো। গেলো শনিবার (৭ মে) পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্বিতীয়বারের মতো জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। 

একদল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী পার্লামেন্ট ভবন ঘেরাও করতে গেলে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী। এসময় নিরাপত্তাবাহিনী  এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটে অনেক স্কুল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।

এদিকে, সড়কের পাশাপাশি অনলাইনেও জোরদার হচ্ছে শ্রীলঙ্কার সরকার বিরোধী আন্দোলন। রাজাপক্ষে সরকারকে হটাতে আন্তর্জাতিক সংস্থার হস্তক্ষেপ চেয়েছে দেশটির অনেক নাগরিক।  

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ‘সেভ শ্রীলঙ্কা’ নামে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে। এতে লঙ্কান সরকারের ভুল অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত, রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির চিত্র  তুলে ধরা হয়।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জরুরি অবস্থার পাশাপাশি বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এটি চলমান পরিস্থিতিকে আরও সহিংস করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর এবার চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে আছে শ্রীলঙ্কাকে। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। দেশটি রেকর্ড মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি। লোডশেডিং, জ্বালানি–সংকট, খাদ্য ঘাটতি চরম আকার ধারণ করেছে। গণ-অসন্তোষ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।  ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন অঞ্চলে। সংকটের কারণে দ্বীপ  রাষ্ট্রটিতে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে।  সেই বিক্ষোভ প্রায়ই সহিংস আকার ধারণ করছে। 

শ্রীংলকার অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভ  মাত্র ২.৩ বিলিয়ন ডলার ছিলো।  

অর্থনৈতিক এমন নাজুক পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্প্রতি বিদেশি ঋণ পরিশোধ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটি।

গেলো এপ্রিলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক বিভাগের সচিব মিজ ফাতিমা ইয়াসমিন গণমাধ্যমকে জানান, শ্রীলঙ্কার সর্বমোট ঋণের পরিমান ৩৫ বিলিয়ন ডলার যা, ২০২৬ সালের মধ্যে দেশটিকে পরিশোধ করতে হবে। প্রতি বছর সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার হারে এই ঋণ শোধ করতে হবে ।

তাসনিয়া রহমান  

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন অবশেষে | পদত্যাগের | সুর | বাজলো | শ্রীলঙ্কান | প্রধানমন্ত্রীর