আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

আমদানি বাড়ায় বৈদেশিক রিজার্ভে চাপ

আমদানি বাড়ায় বৈদেশিক রিজার্ভে চাপ

একদিকে আমদানির চাপ বাড়ছে, অন্যদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বর্তমানে ৪১ বিলিয়ন ডলারের এই রিজার্ভ দিয়ে ৬ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

করোনা মহামারির দু'বছরে উচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং দাতা সংস্থাগুলোর ঋণ সহায়তায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছায়। গত আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ায় রিজার্ভ। এখন তা নেমেছে ৪১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। বর্তমানের এ রিজার্ভ দিয়ে ছয় মাসের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব।

আমদানি ব্যয়ে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স কমায় রিজার্ভে টান পড়েছে বলে মনে করছেন আর্থিক খাত বিশ্লেষকরা। গত মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে আমদানি ব্যয় প্রায় ৪৪ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ১৫২ কোটি ডলার হয়েছে। রপ্তানি ৩৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৬৬২ কোটি ডলার। অন্যদিকে রেমিট্যান্স কমে ১ হাজার ৫৩০ কোটি ডলারে নেমেছে। এতে বাড়ছে সামগ্রিক বাণিজ্য ঘাটতি।

অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, এমন পরিস্থিতিতে আমদানিতে লাগাম টানার পাশাপাশি রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়াতে জোর দিতে হবে।

আমদানি দায় মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সবশেষ আমদানি বাবদ বিল পরিশোধ ও ডলার বিক্রির কারণে রিজার্ভ কমে ৪ হাজার ১৯৫ কোটি ডলারে দাড়িয়েছে। এতে গত দেড় মাসে কয়েক ধাপে ডলারের দাম বেড়েছে ৭০ পয়সা।

এর আগে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১২ মে) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

তাতে বলা হয়েছে, করোনা-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের প্রেক্ষাপটে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এক্সপোচার ভিজিট, শিক্ষাসফর, এপিএ এবং ইনোভেশনের আওতামুক্ত ভ্রমণ ও ওয়ার্কশপ বা সেমিনারে অংশগ্রহণসহ সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। এ আদেশ উন্নয়ন বাজেট ও পরিচালন বাজেট উভয় ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। অবিলম্বে আদেশটি কার্যকর হবে।

এ অবস্থায় আমদানির চাপ সামলাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যে বিলাসী পণ্য আমদানিতে ঋণপত্রের মার্জিন হার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দামি গাড়ি ও নিত্যব্যবহার্য ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব পণ্য আমদানির ঋণপত্র খোলার সময় এখন ৭৫ শতাংশ অর্থ অগ্রিম জমা দিতে হবে। এ ছাড়া শিশুখাদ্য, খাদ্যপণ্য, জ্বালানি, ওষুধ, কৃষি ও রপ্তানিমুখী শিল্প ছাড়া সব আমদানিতে ৫০ শতাংশ অর্থ আগে দিতে হবে। আগে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দিয়েই এসব পণ্য আমদানি করা যেত।

হাসিব মোহাম্মদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আমদানি | বাড়ায় | বৈদেশিক | রিজার্ভে | চাপ