গাজা উপত্যকার ভয়াবহ পরিস্থিতি সম্পর্কে ইউরোপকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে বলে দাবি জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জোসেপ বোরেল। তিনি বলেছেন, গাজায় বহু সাংবাদিক নিহত হয়েছেন এবং অন্য সাংবাদিকদের পক্ষে সেখানে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) ইইউ’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জোসেপ বোরেল বলেছেন, “গাজা উপত্যকার বেসামরিক নাগরিকরা যে মর্মান্তিক পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন তার ব্যাপ্তি দুঃখজনকভাবে ইউরোপের মানুষ জানতে পারছে না। কারণ, পশ্চিমা সাংবাদিকদের পক্ষে গাজায় যাওয়া সম্ভব হয়নি এবং বহু ফিলিস্তিনি সাংবাদিক তাদের প্রাণ হারিয়েছেন।”
কেন গাজায় মর্মান্তিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে কিংবা ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা কীভাবে প্রাণ হারিয়েছেন তা উল্লেখ করেননি বোরেল। তিনি সম্মিলিতভাবে গাজা সংঘাতের একটি সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার জন্য ইইউভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
জোসেপ বোরেল বলেন, গাজা যুদ্ধের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে সে সম্পর্কে ইইউ’র সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মতৈক্য না থাকার কারণে এ ব্যাপারে ইউরোপ কঠোর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। একই কারণে গাজা পরিস্থিতিতে ইউরোপ দুর্বল অবস্থান নিয়েছে বলে তার ধারনা।
ইইউ’র প্রধান কর্মকর্তা বলেন, “গাজাবাসীর এখন প্রচণ্ডভাবে খাদ্য, পানি, ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন। বোমা ও গুলির বাইরেও দুর্ভিক্ষ ও মহামারী সেখানকার লাখ লাখ মানুষের জীবনকে তাড়া করে ফিরছে।” বোরেল বারবার গাজাবাসীর এই দুর্দশার পেছনের শক্তি ইসরাইলের নাম উচ্চারণ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে ১৯ লাখ মানুষই তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে। তিনি গাজাবাসীকে এই উপত্যকার বাইরে পাঠানোর যেকোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেন।
সমালোচকরা বলছেন, বোরেলের ভাষায় গাজায় পশ্চিমা সাংবাদিকের উপস্থিতি না থাকলেও ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণের সেখানে ইসরাইলি বর্বরতার খবর, ছবি ও ভিডিও প্রতি মুহূর্তে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে যাচ্ছে। ইউরোপের কেউ গাজা পরিস্থিতি সম্পর্কে অজ্ঞ নয়। কিন্তু সেখানে ইসরাইলের ভয়াবহ গণহত্যার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার দায় এড়িয়ে যেতেই জোসেপ বোরেল এই দায়সারা বিবৃতি দিয়েছেন।