ঈদযাত্রায় রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনে সন্তানের জন্ম দিলেন এক নারী। আর তাকে চিকিৎসা সেবা দিলেন ওই ট্রেনেরই যাত্রী এক নারী চিকিৎসক। সোমবার (৮ এপ্রিল) সকালে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ট্রেনে সন্তান প্রসব করা স্বর্ণা আক্তারের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার হুগরি পান্তাপাড়া গ্রামে। তার স্বামীর নাম ইয়াসিন আরাফাত।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানান, স্বর্ণা আক্তার ও ইয়াসিন আরাফাত দম্পতি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে সোমবার রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেসের 'ঙ' কোচে ওঠেন । ভেড়ামাড়ার পার হওয়ার পর স্বর্ণার প্রসব বেদনা ওঠে। তার চিৎকার শুনে যাত্রী এবং রেলকর্মীরা ছুটে যান।
অসীম তালুকদার বলেন, ওই ট্রেনেই যাচ্ছিলেন নাজমীন আক্তার নামে একজন চিকিৎসক। তার তত্ত্বাবধানে ট্রেনের গার্ড, টিটিই এবং অ্যাটেনডেন্টরা একটি জায়গা কাপড় দিয়ে ঘিরে দেন। ট্রেনটি ঈশ্বরদী স্টেশনে এলে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছেলে শিশুটির জন্ম হয়। হাসপাতালে যাওয়ার জন্যই তারা রাজশাহীর ট্রেনে উঠেছিলেন। ভেড়ামারা পার হওয়ার পর স্বর্ণার পেইন ওঠে। পাকশি এলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিৎকার করে সহায়তা চান। পরে আমাদের কর্মীরা ট্রেনের মাইকে ঘোষণা দেন কোনো চিকিৎসক আছেন কি না। ডা. নাজমীন আক্তার এগিয়ে এলে তার সহায়তায় সব ব্যবস্থা হয়।
অসীম তালুকদার বলেন, ওই ট্রেনেই রাজশাহীতে পৌঁছান স্বর্ণা-আরাফাত দম্পতি। সেখানে তাদের বরণ করে নেন রেলের কর্মকর্তারা। আমি শুনে স্টেশনে যাই। তাদের রিসিভ করে আমাদের একটা অ্যাম্বুলেন্সে করে একটি ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিয়েছি। বাচ্চাটা বেশ ভালো আছে।
ডা. নাজমিন আক্তার বগুড়ার টিএমএসএম মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় নিজের চেম্বারে রোগী দেখেন।
নাজমিন আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, তিনিও আলমডাঙ্গা থেকেই রাজশাহী যাচ্ছিলেন। ছিলেন পাশের ‘চ’ বগিতে। পোড়াদহ স্টেশন পার হওয়ার পর ট্রেনের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জানতে চাওয়া হয় ট্রেনে কোনো চিকিৎসক আছে কি না, একজন নারীকে সহায়তা করতে হবে। এ ঘোষণা শোনার পর জানতে চাই তিনি কোন বগিতে আছেন। পাশের বগিতে থাকায় দ্রুতই সেখানে চলে যাই। গিয়ে দেখি সেখানে আরেকজন মিডওয়াইফও ছিলেন। আর ওই ভদ্রমহিলা ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। আমরা দুজন বাচ্চা ডেলিভারি করাই।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুনচলন্ত | ট্রেনেই | জন্ম | নিলো | ফুটফুটে | শিশু