কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীকে লাঞ্চনার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের মো. ছালেহ আহমেদ নামের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
গেলো মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হিসাব দপ্তরে সার্টিফিকেট উত্তোলনের কাগজপত্র জমা দিতে গিয়ে লাঞ্চনার শিকার হয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ১০ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহ জালাল।
জানা যায়, স্নাতকের সার্টিফিকেট তোলতে ব্যাংকে টাকা পরিশোধ শেষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে হিসাব দপ্তরে স্বাক্ষর নিতে যায় ওই শিক্ষার্থী। এসময় দায়িত্বরত কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকায় হিসাব কর্মকর্তা মো. ছালেহ আহমেদের কাছে যেতে বলেন অন্য এক কর্মকর্তা। কাগজপত্রের মধ্যেই হিসাব কপি থাকলেও ছালেহ আহমেদ তা বের করে দেখাতে বলেন। তখন ওই শিক্ষার্থী কপিটি এখানে আছে বললে কর্মকর্তা বিভিন্ন কথা বলেন এবং ‘চোখে দেখো না নাকি বলে অপমান করে কথা বলে। পরে ওই শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে কর্মকর্তা স্বাক্ষর করে দেন। তবে বিষয়টি তেমন কিছু নয় বলে দাবি অভিযুক্ত কর্মকর্তার।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘Comilla University' নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। পরে অনুমতি না নিয়ে গ্রুপটির এডমিন পোস্টটি সরিয়ে দিয়েছে অভিযোগ করেন তিনি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমি সকালে স্নাতকের সার্টিফিকেট তুলতে যাই। সেখানে হিসাব দপ্তরের একটি স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। সেটি নিতে অর্থ ও হিসাব দপ্তরে গেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা না থাকায় পাশের রুমের কর্মকর্তা ছালেহ আহমেদকে দেখাতে বলেন। প্রথমে আমি সালাম দিয়ে স্বাক্ষরের কথা জানতে চাইলে ওনি অনুপস্থিত কর্মকর্তার রুমে যেতে বলেন। কিন্তু তাকে না পেয়ে আবারও ছালেহ আহমেদের কাছে ফিরে এসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে স্বাক্ষরের কথা বলি। কাজপত্রের মাঝেই হিসাব কপি পিনআপ করা থাকলেও ওনি বলেন হিসাব কপি কই। ওনি তখন বাজে ব্যবহার করে এবং বলে তুমি কি চোখে দেখ না এটা যে হিসাব কপি। ওনি আমার সাথে তর্ক করতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যজুয়েট হওয়া সত্তেও যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা মর্যাদা না পাই বাইরে তাহলে কি মর্যাদা পাব। একজন কর্মকর্তা তার কাজ নিজে না করে আমাকে কেন প্রশ্ন করবে। বিষয়টি নিয়ে আমার অসন্তোষ আছে। আমি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবো।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ছালেহ আহমেদ বলেন, এরকম কিছুই হয়নি। ও হয়তো ভুল বুঝতেছে। সে আমার অফিসে আসলে তাকে হিসাব কপিটি ছিড়ে দিতে বলি, সে ছিড়ে দিলে আমি স্বাক্ষর করে দেই। পরে ওর বাড়ির পরিচয় জানতে চাই, জানতে পারি সে আমার এলাকার। পরে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলছিলাম, সে ৮-১০ মিনিট আমার এখানে বসা ছিল। এটি হয়তো ভুল বুঝাবুঝি তেমন কিছুই হয়নি।
এবিষয়ে জানতে ট্রেজারার ও উপাচার্যের মুঠোফোনে ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, বিষয়টি আমি এখন শুনেছি। আমাদের একজন কর্মকর্তা কোন শিক্ষার্থী বা অন্যকারো সাথে হেনস্তামূলক আচরণ করবে এটি কোনভাবে কাম্য নয়। আমরা এরকম কোন অভিযোগ যদি পেয়ে থাকি অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।