আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

জ্যাকলিনকে আদালতে হাজিরা দিতে তলব

জ্যাকলিনকে আদালতে হাজিরা দিতে তলব

২০০ কোটি টাকার তছরুপ মামলার চার্জশিটে নাম জুড়েছে বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের নাম। গেলো আগস্টের শুরুতেই প্রকাশ্যে আসে এ খবর। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজিরা দেয়ার জন্য তাকে তলব করেছে দিল্লি পুলিশ।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে একটি অতিরিক্ত চার্জশিটও দায়ের করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

গেলো এপ্রিল মাসে ১৫ লাখ টাকার পাশাপাশি জ্যাকলিনের ৭.২৭ কোটির ফান্ডও ইডির নজরে এসেছিল। ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট’এর আওতায় এ সম্পদও বেআইনি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইডির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, প্রায় ৫.৭১ কোটি টাকার যে উপহার সুকেশ চন্দ্রশেখর অভিনেত্রীকে দেন, তা পুরোটাই বেআইনি টাকায় কিনেছিলেন অভিযুক্ত। ইডির দায়ের করা চার্জশিটটি বিবেচনা করে জ্যাকলিনকে অভিযুক্ত হিসেবে সাব্যস্ত করেছে ‘দিল্লির পাতিয়ালা হাউজ কোর্ট’।

তার ফিক্সড ডিপোজিট-সহ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সমস্ত সম্পত্তি। কেড়ে নেয়া হয়েছে বিদেশযাত্রার অধিকার। যদিও অভিনেত্রীর আইনজীবী প্রশান্ত পাতিল ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, জ্যাকলিন ষড়যন্ত্রের শিকার, তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

মুখ খুলেছেন জ্যাকলিনও। ইডিকে জোর দিয়ে বললেন, সুকেশের সংস্পর্শে আসার আগেই নিজের আয় থেকে বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। ফিক্সড ডিপোজিটে থাকা ৭.২ কোটি টাকার সবটাই তার নিজস্ব সম্পত্তি। 

অভিনেত্রী আরও বলেছেন, ‘‘সুকেশের অস্তিত্ব ছিল না যখন, তখন থেকেই এ সম্পত্তি  আমার। এর উৎস আমারই বৈধ আয়।’’

জ্যাকলিন আরও জানান, তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, তিনি সুকেশের কাছ থেকে বহুমূল্যের উপহার পেয়েছেন। 

গেলো বছর দাখিল করা ইডির চার্জশিট অনুযায়ী, জ্যাকলিন নিশ্চিত করেছেন যে, সুকেশ তাকে ‘গুচ্চি’, ‘শ্যানেল’-এর মতো বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের তিনটি ডিজাইনার ব্যাগ উপহার দিয়েছেন। এছাড়াও জিমে পরার জন্য দুটি ‘গুচ্চি’র পোশাক, একজোড়া ‘লুই ভিতোঁ’র জুতো, দু’জোড়া হিরের কানের দুল, রঙিন পাথরের ব্রেসলেট এবং দুটি ‘হার্মিস’ ব্রেসলেট জ্যাকলিনকে দিয়েছিলেন সুকেশ, যা তোলাবাজির টাকায় কেনা বলে অভিযোগ। এছাড়াও একটি মিনি কুপার গাড়িও পেয়েছিলেন জ্যাকলিন, যা তিনি ফেরতও দিয়ে দিয়েছিলেন।

সুকেশ তহবিল তছরুপের ঘটনায় জেলে যাওয়ার পরও জ্যাকলিনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন বলে জানা যায়। জেলের মধ্যে থেকে জ্যাকলিনকে মেসেজ করতেন সুকেশ। শুধু তা-ই নয়, তাদের গভীর সম্পর্কের কথা জানাজানি হতেই পুলিশের নিশানায় আসেন জ্যাকলিন।

এক বিবৃতিতে জ্যাকলিনের আইনজীবী বলেছেন, ‘‘তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে সব রকম সহযোগিতা করেছেন অভিনেত্রী। এখনও পর্যন্ত সব সমনেই তিনি হাজিরা দিয়েছেন। সামর্থ্য অনুযায়ী সব তথ্য ইডিকে দিয়েছেন।’’ 

আইনজীবীর প্রশ্ন, তার পরও কেন হেনস্থা করা হচ্ছে তাকে? প্রশান্তের মতে, জ্যাকলিনের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন,‘‘তদন্তকারী দলগুলো বুঝতে পারছে না, জ্যাকলিন একটি বড়সড় ষড়যন্ত্রের শিকার।’’

এক ওষুধ সংস্থার প্রাক্তন মালিক শিবেন্দ্র সিংহ এবং মালবেন্দ্র সিংহের পরিবারের সঙ্গে ২০০ কোটি টাকার প্রতারণা করেছিলেন সুকেশ চন্দ্রশেখর এবং তার স্ত্রী লিনা পল। সেই মামলায় গ্রেপ্তার হন দম্পতি। সুকেশের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন বলে একই মামলায় নাম জড়িয়ে এখন কাঠগড়ায় বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্দেজ।

এসি

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন জ্যাকলিনকে | আদালতে | হাজিরা | তলব