প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর অবশেষে চার উপদেষ্টার আশ্বাসে বুধবার দিবাগত গভীর রাতে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনে বিক্ষোভরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে আহত ব্যক্তিরা হাসপাতালে ফিরে গেছেন। এর আগে হাসপাতাল থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে তারা দাবি তোলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা তাদের সঙ্গে দেখা করে প্রতিশ্রুতি না দেয়া পর্যন্ত তারা সড়ক ত্যাগ করবেন না। বিষয়টি আমলে নিয়ে গভীর রাতেই অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী তাদের কাছে ছুটে যান এবং তাদের আশ্বাস পেয়েই হাসপাতালে ফিরে যান।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনের সড়কে যান।
উপদেষ্টারা আহতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সচিবালয়ে তাদের দাবি নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য একটি পরিষ্কার রূপরেখা তৈরি করা হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
পরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের ব্যর্থতা, আমাদের ভুল আছে। কিন্তু চেষ্টার দিক দিয়ে আমাদের ঘাটতি ছিল না। যে কোনো কারণেই হোক আমরা পারিনি। আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখুন, আমরা একটি কংক্রিট (সুষ্পষ্ট) রূপরেখা দিব, লিখিত দিব।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, একটা ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। বহু সমস্যা দেখা দিয়েছে। আসুন আমরা আলোচনার ভিত্তিতে একটা রূপরেখা তৈরি করি। সেটা ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য আপনারা একটা টিম করবেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, আমরা কথা দিচ্ছি, আপনাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করব। না পারলে তখন যা ইচ্ছা করবেন, কোনো আপত্তি থাকবে না। তবে আপনাদের সুষ্ঠু চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে।
এর আগে গতকাল দুপুরের পর থেকেই তারা সড়কে অবস্থান করছিলেন। সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অন্যান্য নেতারা তাদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। কিন্তু রাতে উপদেষ্টাদের না আসা পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়তে রাজি হননি। পরে উপদেষ্টাদের আশ্বাসে তাদের বিক্ষোভের সমাপ্তি ঘটে।
জেডএস/ এমআর