আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এ দেশে মেধার জেনোসাইড করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদেরকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করা হয়েছে। এ দেশকে খুন-গুম-ধর্ষণের চারণভূমিতে পরিণত করা হয়েছিল। যখন তখন যাকে তাকে খুন-গুম করা হয়েছে। কেউ কাঁদতেও পারেনি। বললেন জামায়াতে ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
আজ শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে জাতীয় কৃষিবিদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এগ্রিকালচারিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ এর আয়োজন করে।
জামায়াতে ইসলামির আমির বলেন, রাজনীতি করার জন্য রাজকীয় মন দরকার, ভিখারির মন নয়। রাজনীতি করতে গিয়ে নোংরা চিন্তা যারা করেন তাদেরকে রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। চব্বিশের নতুন বাংলাদেশে তরুণ ছাত্র-জনতা আপনাদের আর চায় না।
তিনি বলেন, স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর আমরা দেখতে পাচ্ছি অনেকেই নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদেরকে বলবো আপনারা উচিত রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসা। আপনাদের আর দেশের যুবসমাজ চায় না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এতদিন উন্নয়নের রোল মডেলের কথা বলে জাতিকে ধোঁকা দেয়া হয়েছে। সোনার বাংলাদেশ গড়ার নামে দেশটাকে শ্মশানে পরিণত করেছিলো।
তিনি বলেন, আপনাদের থেকে প্রায়ই আয়নঘরের বর্ণনা শুনি। স্বৈরাচার সরকারের সময়ে আমাকেও আয়না ঘরে রাখা হয়েছিল। যদিও সে সময়টা খুব বেশি ছিল না, মাত্র দুই ঘণ্টা সেখানে রাখা হয়েছিল। যাদেরকে গুম করা হয়েছিল তাদের অনেকের সঙ্গেই সেখানে আমার দেখা ও কথা হয়েছে। তাদের অনেকেই জানে না তাদের পরিবার-স্বজন কেউ বেঁচে আছেন কি না। এমনকি তারাও যে বেঁচে আছে, সেটিও তাদের পরিবার জানেন কি না তারা বলতে পারেন না।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ যুদ্ধ অপরাধের নামে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করেছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে যে-সব অভিযোগ দিয়ে তা করা হয়েছে, সেগুলো ছিল শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যাচার। আমরা আশা করি জাতির সামনে সেগুলো একদিন উন্মোচন হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামীও এক সময় সরকারের অংশ ছিল। তখন দলটির দুজন শীর্ষ নেতা দুটি মন্ত্রণালয় চালিয়েছিলো। সেই সময়ে মানবজমিন পত্রিকায় একটা রিপোর্ট করেছিলো 'দুই মন্ত্রীর আলাদা জগৎ' শিরোনামে। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে একদিকে কাড়াকাড়ি, অন্যদিকে শুনশান নীরবতা। দলীয় কর্মীরাও সেখানে জায়গা পেত না। আমাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো কোনোরকম তদবিরে কাজ হবে না। কারণ সবকিছুর পুঙ্খানুপুঙ্খ জবাব আল্লাহ তায়ালার কাছে দিতে হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন, এগ্রিকালচারিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশের (এএফবি) সভাপতি ড. এটিএম মাহবুব ই ইলাহি (তওহিদ)। এসময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট কৃষি অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
জেএইচ