জাতীয়

মুহূর্তেই ভেঙে খান খান আ.লীগের দুর্গ

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, সোমবার। ছাত্র-জনতার সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ ও তীব্র প্রতিরোধের তোপে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে প্রায় ১৬ বছর পর স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্ত হয় বাংলাদেশ।

অথচ এর আগে ২২ জুলাই শেখ হাসিনা অহংকার করে বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা পালায় না’। এমন দম্ভ দেখানোর দুই সপ্তাহের মধ্যে পদত্যাগ করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে ভারতের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যান তিনি। 

৫ আগস্ট কড়াকড়ি কারফিউ উপেক্ষা করে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে হাজার হাজার মানুষ রাজধানী ঢাকা অভিমুখে পদযাত্রা করেন। দেশজুড়ে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নামেন। 

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে জনতার উল্লাসে মুখরিত হয়ে ওঠে চারদিক। মুহূর্তেই ভেঙে খান খান হয়ে যায় আওয়ামী লীগের কথিত রাজনৈতিক দুর্গ।

হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা রাজপথে নেমে দীর্ঘদিনের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের পতন উদ্‌যাপন করে।

এর আগে রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। দুপুরের দিকে হাজার হাজার মানুষ শাহবাগে জড়ো হতে থাকেন। 

শেখ হাসিনা হঠাৎ দেশত্যাগ করার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজধানীসহ সারাদেশে ছাত-জনতার ওপর গুলি চালায়। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, এই আন্দোলনে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হন। আহত হয়েছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ । দেশ পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তরে। 

সমন্বয়করা সারাদেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায় স্বীকার করে শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়াসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছিলেন। পরে শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করে। 

এই ঘোষণার পর আন্দোলনকারীদের ওপর দমনপীড়ন আরও বেড়ে যায়। এরপর আন্দোলনকারীরা ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা মূলত ৬ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ৩ ও ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হামলায় যথাক্রমে ৯৩ ও ৬৬ জন নিহত হলে  শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি ৫ আগস্ট এগিয়ে আনেন। 

এ দিনটিকে আন্দোলনকারীরা ‘৩৬ জুলাই’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তাদের মতে, শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত জুলাই মাস শেষ হবে না।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #জুলাই #জুলাই গণঅভ্যুত্থান #শেখ হাসিনা #৫ আগস্ট