নেপালে চলমান ‘জেনারেশন জি’ আন্দোলনের চাপের মুখে এবার পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর) নেপালের সচিবালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গতকাল সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) থেকে নেপালে বিক্ষোভ চলছে। কারফিউ উপেক্ষা করে আজ সকাল থেকে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নামেন। তারা নেপালি কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রী ও রাজনীতিকের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
দুর্নীতি ও পদ্ধতিগত ব্যর্থতার অবসানের দাবিতে সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) নেপালে ব্যাপক বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও রয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪০০ জনেরও বেশি তরুণ।
নেপালি কংগ্রেসের সমর্থনে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়া অলি এ ঘটনার পর ক্রমাগত চাপের মুখে ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা এবং বিভিন্ন অধিকার সংগঠন তাকে দোষী করেন নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার জন্য।
অলির পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটে। তিনি এর আগে ২০১৫–১৬, ২০১৮–২১, সংক্ষিপ্তভাবে ২০২১ সালে এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ক্ষমতায় ছিলেন।
জাতীয়তাবাদী অবস্থান ও কঠোর নেতৃত্বের জন্য পরিচিত অলি স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও শেষ পর্যন্ত তার শাসনকাল ঘিরে অস্থিরতা, কর্তৃত্ববাদ এবং গণতন্ত্রের সংকোচনের অভিযোগ উঠে।
অলির পদত্যাগ সত্ত্বেও নেপালের রাজপথ এখনও উত্তপ্ত। মঙ্গলবারও রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।
বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, কেবল নেতৃত্ব পরিবর্তনই যথেষ্ট নয়—পদ্ধতিগত সংস্কার এবং সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
সূত্র: কাঠমাণ্ডু পোস্ট
এসি//