করোনা পরিস্থিতিতে ড্রাইভার, ইঞ্জিন স্বল্পতা ও স্টেশন মাস্টার না থাকার কারণে চিলমারী-পার্বতীপুর রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে ১১ মাস ধরে। স্বল্প ভাড়ায় সহজেই ট্রেনে চিলমারী’র রমনা থেকে পার্বতীপুর ও পার্বতীপুর থেকে চিলমারী’র রমনা যাতয়াত করতে সুবিধা হত সাধারণ যাত্রীদের। বন্ধ থাকার ফলে রেলপথে যাতায়াতকারী জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়াও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বেশী ক্ষতিগ্রস্তের শিকার এই অঞ্চলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ট্রেন চলাচল বন্ধে বেকার হয়ে পড়েছেন অনেকেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেল বছরের ৮ মার্চ দুপুরে চিলমারী’র রমনা থেকে পার্বতীপুর ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেনি। এখনও বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। কবে থেকে আবারও নিয়মিতভাবে চিলমারী-পার্বতীপুর পথে ট্রেন চালু করা হবে এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কেউই পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারছেন না।
সূত্রমতে, ১৯২৮ সালের ২ আগস্ট বন্দর নগরী চিলমারী থেকে প্রথম রেলপথ চালু হয়। তিস্তা থেকে কুড়িগ্রাম হয়ে চিলমারী’র রমনা স্টেশন পর্যন্ত ৫৭ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ৪৩ কিলোমিটার রেলপথ পড়ে কুড়িগ্রাম জেলার ভেতরে। সে সময় যাত্রীদের সুবিধার্থে এই ৪৩ কিলোমিটার রেলপথে স্থাপন করা হয় ৮টি স্টেশন।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম রেলপথ চালুর পর পার্বতীপুর-রমনা রেলপথে সকালে ও সন্ধ্যা মিলে ২টি ও লালমনিরহাট-রমনা পথে দুপুরে ও রাতে ২টিসহ মোট ৪টি ট্রেন চালু ছিল। ২০০২ সালের দিকে হটাৎ করে পার্বতীপুর- রমনা রুটে ১টি ও লালমনিরহাট-রমনা রেল পথের দুটি ট্রেনসহ মোট ৩টি ট্রেন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে একটি ট্রেন পার্বতীপুর-রমনা রুটে সকালে রমনা এসে তিস্তা গিয়ে ফের দুপুরের ট্রেন হয়ে চলাচল করতো।
বন্দর নগরীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, কম খরচে নিরাপদে বিভিন্ন মালামাল ট্রেনে পরিবহণ করতে পারতাম। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকার কারণে বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও সিএনজি দিয়ে বেশি টাকা ব্যয় করে মালামাল পরিবহন করতে হচ্ছে। যার ফলে আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাসহ দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত যাত্রীরা ভীষণ কষ্টের মধ্যে পড়েছি।
এ বিষয়ে বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক নুর মোহাম্মদ জানান, মহামারী করোনা ভাইরাস, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ড্রাইভার, ইঞ্জিন স্বল্পতা ও স্টেশন মাস্টার না থাকার কারণে ট্রেনটি বন্ধ রয়েছে। এ মুহূর্তে ট্রেনটি চালুর পরিকল্পনা নেই।
শেখ সোহান