প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আর্মেনিয়ায় তুর্কি অটোম্যান বাহিনীর হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ স্বীকৃতি দিলেন জো বাইডেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, শনিবার এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রতিবছর অটোম্যান যুগে আর্মেনীয় গণহত্যায় নিহতদের স্মরণ করে যুক্তরাষ্ট্র। ১০৬ বছর আগের গণহত্যায় নিহত আর্মেনীয়দের সম্মান করে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ। ঐতিহাসিক এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে সামরিক জোট-ন্যাটোর সদস্য তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে টানাপড়েনের সম্পর্ক আরো চাপে পড়ল।
বাইডেন বলেন, আমরা তাদের শ্রদ্ধা জানাই। তাদের ব্যথা অনুভব করি। তাদের ইতিহাসকে স্বীকার করি। এসব আমরা দোষারোপের জন্য নয়। যা ঘটেছে তার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে তার জন্য করছি।
এদিকে, তাৎক্ষণিকভাবে মার্কিন বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে এক টুইটে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগলু জানান, জনগণকে তুষ্ট করতেই এ ঘোষণা। আমাদের ইতিহাসের বিষয়ে অন্য কারো কাছ থেকে শিক্ষা নেবে না তুরস্ক।
ঘটনার কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ন্যাটো সদস্য হিসেবে মিত্র তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার স্বার্থে কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটনাটিকে জেনোসাইড বলেনি মার্কিন প্রশাসন।
এর আগে কেবল জনসমক্ষে একে জেনোসাইড বলতেন যুক্তরাষ্ট্রে আর্মেনীয়দের সবচেয়ে বড় আবাসস্থল ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আসা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান।
আর্মেনীয় হত্যার ঘটনাকে গণহত্যা অভিহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়টি শুক্রবার পর্যন্ত পিছিয়ে রাখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
১৯১৫ থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যে অটোম্যান সাম্রাজ্যে অন্তত ১৫ লাখ আর্মেনীয় নিহত হয়। ঐতিহাসিকভাবে স্পর্শকাতর ওই ঘটনার নৃশংসতা স্বীকার করলেও একে গণহত্যা বলতে নারাজ আঙ্কারা। ২০১৯ সালে আর্মেনীয় গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি প্রতীকী প্রস্তাব পাশ হয় মার্কিন কংগ্রেসে।
উত্তেজনাপূর্ণ এই সম্পর্কের মধ্যে আগামী জুনেই ব্রাসেলসে অনুষ্ঠেয় ন্যাটো সম্মেলনে সাইডলাইন বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন তুর্কি-মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এসএন