জুমার দিনের সেরা আমল নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে আগে আগে মসজিদে চলে আসা। মসজিদে প্রবেশ করে সুন্নাত নামাজ পড়ে কারো সঙ্গে কথা না বলে খুতবা শোনার অপেক্ষায় চুপচাপ জিকির-আজকার করা। ইমামের খুতবা দেয়া শুরু করলে তা মনোযোগের সঙ্গে শোনা।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমার নামাজ পড়া ছাড়াও বিশেষ কিছু সুন্নাতি আমলের কথা একাধিক হাদিসের বর্ণনায় উল্লেখ করেছেন।
চলুন জেনে নেই জুমার দিনের সেরা আমল:
১ . হজরত আওস ইবনু আওস আস-সাকাফি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন (স্ত্রী সহবাসজনিত) গোসল করলো এবং সকাল সকাল যানবাহন ছাড়া পায়ে হেঁটে মসজিদে গিয়ে ইমামের কাছাকাছি বসলো, মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে খুতবাহ শুনলো এবং অনর্থক কিছু করলো না, তার জন্য প্রতি কদমে এক বছরের রোজা রাখা ও রাত জেগে নামাজ পড়ার সমান সাওয়াব রয়েছে।’ (তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
২. হজরত শাদ্দাদ ইবনু আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের সর্বোত্তম দিন হলো জুমার দিন। এ দিন আদম (আলাইহিস সালাম) কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিন শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে এবং তাতে বিকট শব্দ হবে। অতএব তোমরা এ দিন আমার উপর প্রচুর পরিমাণে দুরূদ পাঠ করো। তোমাদের দুরূদ অবশ্যই আমার কাছে পেশ করা হয়। এক ব্যক্তি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কীভাবে আমাদের দুরূদ আপনার কাছে পেশ করা হবে, অথচ আপনি তো অচিরেই মাটির সঙ্গে একাকার হয়ে যাবেন? তিনি বলেন, ‘আল্লাহ নবিদের দেহ মাটির জন্য খাওয়া হারাম করেছেন।’ (ইবনে মাজাহ, ইবনে খুজাইমাহ, আবু দাউদ, মিশকাত)
৩. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে জুমার নামাজে এসে ইমামের কাছাকাছি হয়ে বসলো এবং নীরবে মনোযোগ সহকারে খুতবাহ শুনলো, তার এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সময়ের এবং আরও তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করা হয়। আর যে ব্যক্তি কংকর স্পর্শ করলো, সে অনর্থক কাজ করলো।’ (ইবনে মাজাহ, মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
৪. হজরত আবু লুবাবা ইবনু আবদুল মুনজির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের দিনসমূহের নেতা এবং তা আল্লাহর কাছে বেশি সম্মানিত। এ দিনটি আল্লাহর কাছে কোরবানির দিন ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়ে বেশি সম্মানিত। এ দিনে রয়েছে পাঁচটি বৈশিষ্ট্য
আল্লাহ তাআলা এ দিনে আদমকে (আলাইহিস সালাম) সৃষ্টি করেন। এ দিনই আল্লাহ তাঁকে পৃথিবীতে পাঠান আর এ দিনই আল্লাহ তাঁর মৃত্যু দান করেন। এ দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে; যখন কোনো বান্দা আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে তখন তিনি তাকে তা দান করেন; যদি না সে হারাম জিনিসের প্রার্থনা করে। আর এ দিনই কেয়ামত সংঘটিত হবে। (এ কারণে) নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতারা, আসমান-জমিন, বায়ু, পাহাড়-পর্বত ও সমুদ্র সবই জুমার দিন শংকিত হয়।’ (ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহামদ, মিশকাত)
আল্লাহ তাআলা সবাইকে জুমার দিন যথাযথভাবে সুন্নাতি আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।